রাজীবের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় বিজেপির উদ্দেশ্যে বড়সড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের জমজ রাজ্য বলা হয় ত্রিপুরাকে। বাংলার মতোই উত্তর-পূর্বের এই ক্ষুদ্র রাজ্যটিতেও বাঙালি‌ই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বাংলাতেও যেমন বিপুল সংখ্যক আদিবাসী থাকেন, তেমনই ত্রিপুরাতেও সেখানকার পুরনো ত্রিপুরী জনজাতী মানুষের সংখ্যা কম নয়। সবচেয়ে বড় কথা বাংলার মতোই ত্রিপুরাতেও দীর্ঘদিন কংগ্রেস ও বামেরা ক্ষমতায় ছিল।

স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলায় দেখা গিয়েছে জোরদার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে তবেই রাজনৈতিক পালাবদল ঘটানো সম্ভব হয়। ২০১১ সালে ঠিক এমনই গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে সিপিএমকে হারিয়ে বাংলার ক্ষমতা দখল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ত্রিপুরার রাজনৈতিক ইতিহাসও বলছে সেখানে বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুললে তবেই একমাত্র রাজনৈতিক পালাবদল ঘটানো সম্ভব হয়। আর ঠিক এই বিন্দুতে এসে বাঙালি অধ্যুষিত ত্রিপুরার মসনদ তৃণমূলের দখলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বাংলা থেকে ত্রিপুরায় গিয়ে প্রবল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিপ্লব দেব সরকারের গুন্ডারাজকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়াটা খুব একটা সহজ ছিল না। এই কাজের গুরুত্ব বুঝে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় তৃণমূলের সেনাপতি নিযুক্ত করেন বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বরাবরই তৃণমূল স্তরে সংগঠন সাজিয়ে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলায় দক্ষ রাজীব। এটা বোধহয় ম্যানেজমেন্ট পড়ার দৌলতে তাঁর এক সহজাত ক্ষমতা। সবাইকে নিয়ে চলতে পারেন এবং প্রত্যেকের ব্যক্তিগত দক্ষতা বুঝে প্রয়োজন মতো ব্যাবহার করায় সিদ্ধহস্ত বাংলার এই প্রাক্তন মন্ত্রী।

এদিকে ত্রিপুরার আমজনতার বিপ্লব দেবের বিজেপি সরকারের ওপর বীতশ্রদ্ধ হলেও প্রকৃত বিকল্পের অভাবে গত চার বছর ধরে চুপ করে থাকতে বাধ্য হয়েছে। এখনও পর্যন্ত খাতায়-কলমে সে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল সিপিএম। কিন্তু ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই তারা হঠাৎই কেমন যেন মিইয়ে গিয়েছে।

বোধহয় দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে বাম নেতাদের মস্তিষ্কে মেদ জমেছে। এই অবস্থায় ত্রিপুরার মানুষের সহায় হয়ে অবতীর্ণ হয় তৃণমূল। কিন্তু নতুন করে সংগঠন গড়ে তুলে বিপ্লব দেবের গুন্ডা বাহিনীর মোকাবিলা করাটা খুব একটা সহজ কাজ নয়।

এ ক্ষেত্রে যেমন দুর্দম আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, তেমনই দলীয় নেতাকর্মীদের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা দরকার। এই পরিস্থিতিতে অতি ভদ্র, মার্জিত এবং দুর্দান্ত পরিচালন ক্ষমতাধারী কোন‌ও এক ব্যক্তিকে প্রয়োজন ছিল কমান্ডার হিসেবে।

সেক্ষেত্রে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যেকোনও দলের কাছে অটোমেটিক চয়েজ। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজীবকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দিতেই তিনি সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

রাজীবের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় বিজেপির উদ্দেশ্যে বড়সড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল। দীর্ঘদিনের বাম সমর্থকরাও রাজ্যের হাল ফেরাতে তৃণমূলের পতাকা তলে এসে জড়ো হচ্ছে।

আগামী একটা বছরে রাজীবের হাত ধরে ত্রিপুরায় তৃণমূল নিজেদের ঘর পুরোপুরি গুছিয়ে নিতে পারবে বলেই মনে হয়। আপাতত তাই মিশন ২০২৩ প্রোজেক্ট হাতে নিয়ে দৌড়ে চলেছেন ম্যানেজমেন্ট পাস রাজীব।

সম্পর্কিত পোস্ট