অভিষেক দলের বিস্তারে মন দেবেন, বাংলায় সংগঠন দেখবেন মমতা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: তিনি ভীষ্ম পিতামহ নন, বরং আজও যে যাদব শ্রেষ্ঠ কৃষ্ণের ভূমিকায় থাকতে চান, তা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কিছু মন্তব্যকে কোট করে তৃণমূলের অভ্যন্তরে ক্ষমতার লড়াইয়ের আঁচ খুঁজে বেড়াচ্ছে কেউ কেউ। কিন্তু বিষয়টি বোধহয় সেরকম নয়।
এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বলা একটি মন্তব্যের দিকে নজর দিলে ব্যাপারটা আরও পরিষ্কার হবে।বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলনেত্রী।
সেখানেই তিনি বলেন, “আমার উপর কাজের চাপ খুব। প্রচুর ব্যস্ততা আছে। তবু আমি নিজেই বাংলার সংগঠন দেখব। বাংলাকে গুরুত্ব দিতেই হবে।”
এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভুল কিছু বলেননি। যতই তৃণমূল আজ সর্বভারতীয় দল হোক না কেন, তার আঁতুড়ঘর এই বাংলা। স্বাভাবিকভাবেই বাংলা ঠিক থাকলে সব কিছু ঠিক থাকবে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন তৃণমূল নেত্রী অভিষেককে বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছেন।
কিন্তু বিষয়টা বোধহয় আরেকটু অন্যরকম। যেহেতু তৃণমূল এই মুহূর্তে বাইরের রাজ্যগুলিতেও প্রভাব বিস্তারের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে তাই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেখানে অনেক বেশি সময় দিতে হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এর ফলে বাংলার নিচু তলার কর্মী-সমর্থকদের সুবিধা-অসুবিধা কিছুটা হলেও উপেক্ষিত হচ্ছিল।
তাছাড়া দলের সাংসদ-বিধায়করা নিজেদের কথা কোথায় জানাবেন সেটা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এই নিয়ে সম্প্রতি কিছু অসন্তোষের কথাও প্রকাশ্যে উঠে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে দলীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে গড়া বাংলার সংগঠনের ভার কাঁধে তুলে নিলেন বলেই মনে হয়। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে ত্রিপুরা, গোয়া, হরিয়ানা, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলিতে নিশ্চিন্তে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন অভিষেক। তা বলে বাংলায় যে তাঁর কোনও ভূমিকা থাকবে না তা নয়। সবটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি মেনে মিলেমিশে করা হবে।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার আরেকটা বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতারা তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে দলকে আজ উপরে তুলে এনেছে তাঁদের অপমান তিনি কিছুতেই মেনে নেবেন না।