নজরে ২১জুলাই, মোদী- শাহ বধে সলতে পাকানোর ভার্চুয়াল বার্তা
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: ২১ জুলাই- র চিরাচরিত চেনা ছবি উধাও। ২০২০ সাল থেকেই আশা করা হয়েছিল ২০২১ এর করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে হয়তো ব্রিগেডের ময়দানে শহীদ সমাবেশ পালন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ধর্মতলা থেকে পার্কস্ট্রিট। শুধুই সাদা-কালো মাথার ভিড়। স্তব্ধ গোটা মহানগর। কলকাতার রাজপথ ছেয়ে গিয়েছে ঘাসফুলের পতাকায়। এসবের দেখা এবার কিছুই মিলবে না।
তবে সবকিছুর রেকর্ড ভেঙে এবারের পটভূমিটা একেবারেই অন্যরকম। এই প্রথম বাংলার গন্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালন করা হবে তৃণমূলের একুশে জুলাই। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুজরাট এবং উত্তর প্রদেশ।
লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন বাংলা থেকে যেভাবে বিজেপিকে উৎখাত করেছেন তিনি, এবার দিল্লি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করা হবে।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব নিয়েই ঘোষণা করেছিলেন শুধুমাত্র রাজ্যতেই নয়, এবারে সীমানা ছাড়িয়ে তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে যাওয়া হবে ত্রিপুরা,আসাম, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে মমতা এবং অভিষেকের এই জুটি ২০০ গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে । তৃণমূলের এই দুরন্ত জয়ে একলাফে মমতাকে সর্ব ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়ে দিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে মোদী- শাহ বধে ২১ জুলাই থেকেই সলতে পাকানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আগেই ঠিক করা হয়েছিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজয় উৎসব পালন হবে।
এইদিন একসঙ্গে বিজেপি বিরোধী মহড়াও শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অবশ্য ছক বানচাল করে দিয়েছে। যদিও তাতে বিন্দুমাত্র দমেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
- একুশে জুলাই প্রোগ্রাম শেষ করেই ২৬ জুলাই দিল্লি পাড়ি দিচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, শিবসেনা, এনসিপি’র মত দলগুলি বকলমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছেন।
যদিও বঙ্গ কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চূড়ান্ত বিরোধিতা করলেও এই পরিস্থিতিতে মমতার প্রতি যথেষ্ট নরম মনোভাব দেখিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর গলাতেও এখন সেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র বিরোধিতার সুর শোনা যায় না। যদিও অনেকেই বলছেন হাইকমান্ডের নির্দেশে আপাতত তীব্র বিরোধিতা থেকে সরে এসেছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
বামেরাও জানিয়ে দিয়েছে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মোদী বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন করবেন তারা। তবে রাজ্যের ক্ষেত্রে কখনোই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তারা সমর্থন করবেন না।
সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে তৃণমূলের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছতে চলেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রত্যেকবার একুশে জুলাই নতুন স্লোগান সূচনা করেন মমতা। এবার এবার সেই ঝুলি থেকে কোন নতুন স্লোগানের জন্ম হয় সেদিকেই তাকিয়ে তামাম রাজনৈতিক মহল।