অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পাশে দাঁড়ানোয় মুক্তকন্ঠে ধন্যবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিবের বৈঠকের পরে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছিল সংঘাত এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু এ যেন সেই ছোট গল্পের সংজ্ঞা, শেষ হয়েও মনে হচ্ছে না শেষ। রেশ থেকেই যাচ্ছে।
আইপিএস ইস্যুতে জল যখন ক্রমশ থিতিয়ে যাচ্ছে, দেশের আনাচে কানাচ থেকে অবিজেপি দলগুলি রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের শাসক দলের অবস্থানকে সমর্থন করছে ঠিক তখন এই আইপিএস ইস্যুতেই কেন্দ্রকে ট্যুইটবাণে বিদ্ধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একই সঙ্গে এদিন নাম না করেই দলত্যাগীদের পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সবটাই হয়েছে এমন একটা সময়ে, যখন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রয়েছেন বাংলায় তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে।
এমন একটা দিনে এই ঘটনা ঘটল যেদিন অমিত শাহের রোড-শোতে জনপ্লাবন ঘটে গেল। স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় এখন যতই শৈত্যপ্রবাহ চলুক না কেন ভোট বাংলায় রাজনীতির উত্তাপ ক্রমশই বেড়ে চলেছে।
বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলা ঘটনার পর আইপিএস ডেপুটেশনকে ঘিরে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত তুঙ্গে। নিজ সিদ্ধান্তে অনড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই অনস্থায় পাশে পেয়েছেন বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের।
এই অবস্থায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট,ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল,ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। এই সমর্থনের জন্য মুক্তকণ্ঠে ধন্যবাদ জনালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার বিকেলে এই মর্মেই একটি ট্যুইট করেন তিনি।ধন্যবাদ বার্তায় তিনি লেখেন, আইপিএস-দের ডেপুটেশনে চেয়ে কেন্দ্র এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে হস্তক্ষেপ করছে রাজ্যের কাজে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ট্যুইটারে স্পষ্ট ভাষায় লেখেন, “রাজ্য না করা সত্ত্বেও কেন্দ্র দ্বিতীয় বার ডেপুটেশনে ডাকছে আইপিএস অফিসারদের। এটা পরিষ্কার ভাবেই আইপিএস ক্যাডার রুল ১৯৫৪ এর অপপ্রয়োগ।” মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, এই শক্তি প্রদর্শন রাজ্যের এক্তিয়ারে থাকা বিষয়ে জোর করে হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছু নয়।
এইভাবেই এই রাজ্যের আইপিএস অফিসারদের মনোবল গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী দ্ব্যার্থহীন ভাষায় লিখেছেন, “নির্বাচনর আগে এই তোরজোর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভাবধারাটির পরিপন্থী এবং অগণতান্ত্রিক। এই পদক্ষেপ কোনও ভাবেই মানা যায় না।”
এর পরে শুক্রবারই তাঁর সমর্থনে টুইট করেন কেজরিওয়াল। পাশে থাকার বার্তা পৌঁছে দেন ভূপেশ বাঘেল, অমরিন্দর সিংরাও।
প্রসঙ্গত এদিন বিজেপি বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে পেলেন শরদ পাওয়ারকেও। সূত্রের খবর, মমতাকে ফোন করে শরদ পাওয়া সর্বতোভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে প্রচার করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন এনসিপি নেতা।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-home-minister-is-lying-the-seven-point-lie-is-exposed-by-the-grassroots/
তাৎপর্যপূর্ণ হল, মমতা দাবি করেছেন তিন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে রয়েছেন। কিন্তু এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন তা বলা যাবে না।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের মতে, এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলায় বর্তমান সরকারের জন্যই। তারা যে ভাবে পুলিশ ও প্রশাসনকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক বিরোধীদের খতম করার চেষ্টা করেছে, তা এর থেকেও নির্লজ্জ।
আবার বিজেপি মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বলেছেন, ‘বহিরাগতদের’ নিয়ে দল পাকিয়ে লাভ নেই। বাংলায় আইনশৃঙ্খলার কী পরিস্থিতি, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশ কীরকম দলদাসের মতো আচরণ করছেন তা মানুষ ভাল করেই জানেন। তার জবাব ভোটেই পাওয়া যাবে।
এদিন আবার ডায়মন্ডহারবার থেকে নাম না লরেই দলবদলু বিধায়ক, সাংসদ ও নেতাদের এক হাত নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সূর্যের সঙ্গে তুলনা করে অভিষেক বলেন, ‘সূর্যের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে ঝলসে যাবেন। সে অমিত শাহ হোন কিংবা দিলীপ ঘোষ বা সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। যেই লড়াই করবেন সেই ঝলসে যাবেন।’