উদ্বাস্তু কলোনির জমির অধিকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেবে রাজ্য সরকার
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ উদ্বাস্তু কলোনির জমির অধিকার সেখানকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি। তালিকার প্রাথমিক পর্বের কাজ প্রায় শেষ।
১১৯ উদ্বাস্তু কলোনির ২০ হাজার মানুষের হাতে জমির আধিকার স্বত্ব তুলে দেওয়া হবে। আগামী বছর বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করেই তৃণমূল সরকারের এই মরিয়া প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য প্রশানের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জমির অধিকার দেওয়া হবে এমন ১৫ হাজারের তালিকা চূড়ান্ত করেছে রাজ্য সরকার।
চলছে দ্বিতীয় পর্বের সাড়ে ৬ হাজার মানুষের তালিকা তৈরির কাজ। কলোনিগুলির বেশিরভাগ বাসিন্দাই পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তু ও পরে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী।
চলতি বছরের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, প্রথম দফায় ৯৪টি কলোনির বাসিন্দাদের হাতে সেখানকার জমির অধিকার তুলে দেওয়া হবে। সেই কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন। এবার আরও ১১৯টি কলোনির বাসিন্দারা জমির মালিকানা পাবেন।
বেশ কিছু উদ্বাস্তু কলোনি আদতে কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে গড়ে উঠেছিল। সেই জমির অধিকারও যাতে বাসিন্দাদের হাতে দেওয়া যায়, মুখ্যমন্ত্রী সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেবেন। এতে লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন।
এদের মধ্যে হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সুবিধাভোগী। এছাড়াও অধিকাংশই উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দুই দিনাজপুরের।
স্বাধীনতার পর থেকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে গড়ে ওঠে উদ্বাস্তু কলোনি। উদ্বাস্তুদের নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য দিতে আলাদা উদ্বাস্তু পুনর্গঠন দফতরও তৈরি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
সেই দফতরের কাজ ছিল, সরকারি জমিতে উদ্বাস্তুদের জমির ব্যবস্থা করে রাস্তা, জল, আলোর মতো পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু সরকার সেই সময় উদ্বাস্তুদের হাতে জমির মালিকানা দেয়নি। মূলত ঠিকা প্রজা হিসেবে তাঁরা বসবাস শুরু করেন।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/metro-authorities-have-written-to-nabenna-to-run-the-metro-in-compliance-with-the-hygiene-rules/
পরবর্তী কালে কোথাও কোথাও দীর্ঘমেয়াদি লিজের ব্যবস্থাও করা হয়। ফলে, উদ্বাস্তু কলোনির জমি জমি ক্রয়-বিক্রয়ের অধিকার বাসিন্দাদের নেই।
সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সরকার জমির অধিকার দিলেও প্রথম ১০ বছর ওই জমির মালিক তা বিক্রয় করতে পারবেন না।’
ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু পুনর্গঠন দফতরের পক্ষ থেকে জমি হস্তান্তরের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি করা হচ্ছে। করোনাকালেও এই কাড এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
হিন্দু উদ্বাস্তুদের সমস্যা নিয়ে সরব বিজেপি। সিএএ-এনআরসি-র মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রিতি দিয়েছে মোদী সরকার। লোকসভা ভোটে মতুয়াদেরও বড় অংশের সমর্থন গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উদ্বাস্তু কলোনির জমির অধিকার বাসিন্দাদের হাতে দেওয়ার ঘোষণা করেন।
যদিও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে গেরুয়া শিবিরের তরফে বলা হয়, অনুপ্রবেশকারীরাই টিএমসি-র ভোট ব্যাংক। তাই তাদের আশ্রয় দিতেই মমতা সরকারের এই উদ্যোগ।
রাজ্য এনআরসি হবে বলেও সুর চড়ান পদ্ম নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার দাবি, ‘উদ্বাস্তুদের বোকা বানানো র চেষ্টা করছেন মমতা।
সিএএ-এর মাধ্যমে উদ্বাস্তু-শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে কলোনির জমির অধিকার আলাদা করে দেওয়ার কোনও মানে নেই। সবটাই হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য।’
উল্লেখ্য, আসাম এনআরসি-র পর নাগরিকত্ব মিলবে কিনা এই ভয়ে এ রাজ্যের প্রায় ১২ জন বাসিন্দা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।