কোভিড বিধি মেনে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলার বিষয়ে ছাড় মমতার
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: লকডাউনের কারণে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে হোটেল- রেস্তোরাঁগুলি। বৃহস্পতিবার বণিকসভার বৈঠকে তাই বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করল রাজ্য সরকার।
বণিকসভার সদস্যদের অনুরোধ মেনে নিয়ে দিনে ৩ ঘণ্টা করে হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা রাখতে তিনি অনুমতি দিলেন। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা খোলা রাখা যাবে হোটেল-রেস্তোরাঁ। তবে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে এবং বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মেনে তবেই তা খোলা যাবে, সে কথাও কড়াভাবে জানিয়ে দিলেন তিনি।
সেই সঙ্গেই অনলাইনে আরও বেশি কাজ চালানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, যত দ্রুত সম্ভব টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে ।পাশাপাশি তিনি জানান, আগামী ১৬ জুন থেকে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে খোলা হচ্ছে শপিং মলও।
প্রায় এক মাস হল রাজ্যে করোনার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে চলছে কড়া বিধিনিষেধ। বন্ধ সমস্ত গণপরিবহণ। শপিং মল, ফুড প্লাজা, সিনেমা হল, হোটেল, রেস্তরাঁ বন্ধ। তবে হোটেল ও রেস্তরাঁগুলি থেকে অনলাইন ফুড ডেলিভারির কাজ চলছে। তবে সেখানে গিয়ে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে জারি নিষেধাজ্ঞা।
এবার তাতেও ছাড় দেওয়া হল। বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা – এই তিনঘণ্টা হোটেল কিংবা রেস্তরাঁয় বসেই খেতে পারবেন মানুষজন। তবে কঠোরভাবে দূরত্ববিধি মানতে হবে। যথাযথভাবে স্যানিটাইজার, মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
এদিন রেস্তরাঁ খোলায় অনুমোদন দিয়ে এসব একগুচ্ছ শর্তের কথা মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর অবশ্যই হোটেল, রেস্তরাঁর কর্মীদের টিকা নিতে হবে। তারপরই কাজে যোগদানের অনুমতি পাবেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘আমরা ব্যবসা বন্ধের পক্ষে নেই। কিন্তু এমন কিছুও আমরা করব না, যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে চলে যাবে। হোটেলগুলি নিজেদের কর্মীদের টিকা দিক। হোটেল বন্ধ হোক আমরা চাই না। আপনারা নিজেদের কর্মীদের টিকা দিন। আপনারা অনলাইনে ব্যবসা বাড়ান। মিষ্টির দোকান ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা। হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলিকেও তো ওই সময়ে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। ৫ থেকে ৮টা পর্যন্ত হোটেল রোখা যাবে। কর্মীদের টিকা দিয়ে চালান। কোভিড বিধি মেনে চলুন।’
একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মনে করিয়ে দেন, ‘অন্যান্য রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। আমরা সেটা করিনি। কার্ফু করিনি। আমরা কিছু বিধিনিষেধ করেছি। ব্যবসার কথা মাথায় রেখেছি। সকাল ৭টা থেকে ১০ পর্যন্ত দোকানবাজার চলছে। ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত শাড়ি-সহ অন্যান্য দোকান চলছে।মিষ্টির দোকান ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা। একেবারে পুরো বন্ধ নয়। যতটা সম্ভব খুলে রেখেছি। নির্মাণ সংস্থাগুলিকে নিজেদের জায়গায় শ্রমিকদের রাখতে পারে।’
তবে ব্যবসায় অনুমোদন দিলেও, ভ্যাকসিনের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, শিল্পসংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের টিকা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে ভ্যাকসিন কিনে নিতেও বলেন তিনি, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কো-অর্ডিনেশন করার নির্দেশও দেন।
পাশাপাশি তিনি সরকারের তরফে টিকাকরণ নিয়ে বলেন, ‘ভ্যাকসিনে যত টাকা ছিল, খরচ করেছি। ১.৪ কোটি লোককে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। সুপার স্প্রেডার হকার, সবজি বিক্রেতা, গাড়ির চালকদের দিচ্ছি টিকা। শিল্পসংস্থাগুলিও আপনাদের শ্রমিকদের টিকা দিন। ওই টিকা আপনাদেরই কিনতে হবে। আপনারা ধরে নিন, ওই টিকা আপনারা রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলার ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন।’
এরপর বণিকসভার সদস্যরা শপিং মল খোলা নিয়েও তাঁর কাছে অনুমোদন চান। জানান যে শপিং মলগুলি বড় হওয়ায় দূরত্ববিধি এবং নিয়মকানুন মেনে চলা সহজ। তাই এই পরিস্থিতিতে তা খোলা হলে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করেন তাঁরা।
১৬ জুন থেকে শপিংমল খোলার অনুমতিও দিয়ে দিতে পারেন বলে আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোভিড বিধি মেনে চলার কথাও মনে করিয়ে দেন। তার পরের ধাপে ছোট দোকানও খোলার অনুমতি মিলতে পারে, বেলা ১২টা থেকে ৪টে।