মমতা শিল্পবিরোধী নন, তবে কৃষকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে শিল্পের পক্ষপাতী তিনি নন

দ্য় কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পের বিরুদ্ধে ছিলেন না। বরং তিনি কৃষির পাশে সমান গুরুত্ব দিয়েছেন শিল্পকেও। তবে কৃষকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে শিল্পের পক্ষপাতী তিনি নন। সেকারণেই সিঙ্গুরে তিনি শুধু অনিচ্ছুক কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

সোমবার তৃণমূল ভবনে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওখানে শিল্প নয় বলেছিলেন, সেই কথাটি সম্পূর্ণ ভাবে বলা হচ্ছে না। উনি বলেছিলেন একটা বড় অংশে শিল্প হোক। কৃষির উপর নির্ভরশীল দরিদ্র মানুষদেরকে আরেকটা অংশ ছেড়ে দেওয়া হোক।”

গত সপ্তাহে সিঙ্গুরে ১১ একর জমিতে কৃষিজ শিল্প পার্ক করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্লোগান তুলেছেন, ‘কৃষি আমাদের গৌরব, শিল্প আমাদের সম্পদ’। বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা খুবই ‘তা‍ৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

সুব্রতর কথায়, “যে জমিতে চাষ হচ্ছে না পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, অর্থনীতির উন্নতি এবং বেকারদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে সেই জমিকে ব্যবহার করছেন তা বাস্তবধর্মী এবং উপযুক্ত।”

এদিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী কোনও সময়ই শিল্পের বিরুদ্ধে ছিলেন না। তিনি রাজ্যে শিল্প আনার জন্য বারবার বিদেশ গিয়েছেন। শিল্পপতিদের নিয়ে এসে মিটিং করেছেন এবং তার ফলে অনেক শিল্পও আসছে।

তাঁর কথায়, “গত পাঁচ বছরে এবং সব মিলিয়ে মোট দশ বছরে রেকর্ড শিল্প এখানে হয়েছে এবং আরও শিল্পের প্রস্তাবও আসছে।”

একইসঙ্গে এ দিন লকডাউনে বাড়ি ফিরে আসা এরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় রাজ্য সরকার যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে তা জানাতেও ভোলেননি তিনি।

পঞ্চায়েতমন্ত্রীর দাবি, লকডাউনে রাজ্য সরকার ১০০ দিনের কাজ দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের রক্ষা করেছে। না হলে তাঁরা অনাহারে মারা যেতেন। এদিন মোদি সরকারকে বাংলার আর্থিক সাফল্যের খতিয়ান পেশ করতে গিয়ে এই তথ্য দিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।

দেশে যে বাংলা ১০০ দিনের কাজে শীর্ষে সেকথা ফের একবার মনে করিয়ে দিয়ে সুব্রত বলেন, ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন না বলেই মোদি সরকার ছোট ছোট বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করছে এবং কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। দুয়ারে সরকারের জন্য যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা ৫০০০ করে টাকা পাবেন।

এদিন ১০০ দিনের কাজ নিয়ে মোদিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে সুব্রত বলেন, ২০১৫ সালে মোদি বলেছিলেন, কংগ্রেস আমলে গ্রামের মানুষদের জন্য কর্মের অধিকার দিতে শুরু হওয়া এমএমরেগা প্রকল্পকে ব্যর্থ। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি মনে করেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করে রেখেছে এই প্রকল্প।

গ্রামীণ আবাস যোজনায় বাংলাই শীর্ষে। অথচ মোদির রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ঘর প্রতি কর্মদিবস মাত্র ৫০ দিন। উল্লেখ করলেন সুব্রত।

পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কটাক্ষ, গুজরাট এবং বেশ কিছু রাজ্যে মৃত ব্যক্তি, শিশুকে ধর্ষণের দায়ে জেলে বন্দী কয়েদি, সরকারি কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনের নামও রয়েছে এমএনরেগা তালিকায়। অথচ যাঁদের সত্যি প্রয়োজন তাঁদের নাম নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট