পরীক্ষা বিভ্রাট, UGC র বিরোধীতায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে চিঠি মমতার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  করোনা ভাইরাসের ‘ত্রাসে’ কাঁপছে গোটা দেশ। তার মধ্যেই খামখেয়ালিপনার চূড়ান্ত নজির গড়ে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের অন্তিম বর্ষের পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা না ভেবে যেভাবে পরীক্ষা শেষ করাকে গুরুত্ব দিয়ে ইউজিসি নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে তার বিরোধিতা করে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তিনি।

শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো দুই পাতার চিঠিতে ইউজিসির নয়া নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষােভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 
“দেশজুড়েই করোনার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। গত ২৭ জুনই রাজ্য সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগের সেমিস্টার কিংবা শিক্ষাবর্ষের ফলের ভিত্তিতেই পড়ুয়াদের অন্তিম বর্ষের মূল্যায়ন করা হবে।
তবে যদি কোনও পড়ুয়া ওই মূল্যায়নকে না মানতে চান, তাহলে তাদের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে বিশেষ পরীক্ষা দেওয়ার বন্দোবস্থ করা হবে। কিন্তু অন্তিম বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসির নয়া নির্দেশিকা প্রকাশের পরেই উদ্বিগ্ন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের ই-মেল পেয়েছি।
তাঁরা পুরো বিষয়টি আপনার নজরে আনার জন্য আমার কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন। তাঁদের সেই আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে এই চিঠি লিখছি।
পড়ুয়ারা দেশের ভবিষ্যৎ। তাই তাঁদের কেরিয়ার এবং সুস্থতাকেই প্রশাসনের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এই অবস্থায় পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করানো মানে তাঁদের বিপদের আশঙ্কা বহুলাংশে বেড়ে যাওয়া। তাই পড়ুয়াদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা ভেবে যাতে ইউজিসি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি।”
গত সপ্তাহেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ অনুমতি পাওয়ার পরেই কোনও রাজ্য সরকারের সঙ্গে শলাপরামর্শ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের অন্তিম বর্ষের  পরীক্ষা নিয়ে ৬ জুলাই এক নির্দেশিকা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
ওই নির্দেশিকায় পরিষ্কার জানানো হয়, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই অনলাইন কিংবা অন্য কোনও উপায়ে অন্তম বর্ষের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। ইউজিসির ওই নির্দেশিকা নিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
ইউজিসির নির্দেশিকা পাওয়ার পরেই রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব মণীশ জৈন আপত্তি জানিয়ে ইউজিসি কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠান।
এমনকী শুক্রবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সংগঠন উপাচার্য পরিষদের পক্ষ থেকেও আপত্তি তোলা হয়। করোনার কারণে কোনওভাবেই সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব নয় বলেও ইউজিওসিকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। শেষপর্যন্ত এ বিষয়ে এ দিন হস্তক্ষেপ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

সম্পর্কিত পোস্ট