পাহাড়ে ধনখড়-হিমন্তের সঙ্গে মমতার বৈঠকেই কী ঠিক হয় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে থাকবে না তৃণমূল?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সপ্তাহ দুই আগে জিটিএর শপথ উপলক্ষে দার্জিলিঙে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক‌ই কারণে সেই সময় পাহাড়ে ছিলেন বাংলার সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেখানে একদিন বিকেলে হঠাৎই রাজ্যপাল চা চক্রে আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখানে আশ্চর্যজনকভাবে উপস্থিত ছিলেন অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

সেখানে চার দেওয়ালের ভিতরে তাঁদের তিনজনের কী কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাইরে বেরিয়ে জানান, রাজ্যপাল আমন্ত্রণ করেছিলেন তাই চা বিস্কুট খেতে এসেছিলেন, এ নেহাত‌ই সৌজন্য সাক্ষাৎ। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূল সাংসদদের ভোটদানে বিরত থাকার কথা ঘোষণার পর গোটা ঘটনাক্রম অন্যদিকে ঘুরে গিয়েছে। বাম ও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, দার্জিলিঙের সেই চা চক্রের কারণেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সরাসরি ধনখড়ের বিরোধিতা করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে জগদীপ ধনখড়ের নাম ঘোষণার পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা বলতে শুরু করেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েই ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে।

২৬ ঘন্টা টানা জেরার পর গ্রেফতার পার্থ, আটক অর্পিতাও ; টান টান উত্তেজনা রাজ্য জুড়ে

উল্লেখ্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি তাদের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর নাম ঘোষণা করার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিজেপি আগাম জানালে তিনি ভেবে দেখতেন। তাঁর সেই মন্তব্য তুলে ধরে তৃণমূলের উপর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে চাপ বাড়ায় গেরুয়া শিবির।

বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকার যুক্তি হিসেবে  বলেছেন, বিরোধীরা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাদের প্রার্থী মার্গারেট আলভার নাম ঠিক করার সময় তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেনি। পাল্টা কংগ্রেসের দাবি, এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের বাড়িতে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে যে বিরোধীদের বৈঠক হবে তা আগেভাগেই জানানো হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে, বার্তা পাঠানো হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

ওই এক‌ই দিনে সংসদের সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকলেও তিনি পাওয়ারের বাড়িতে বিরোধীদের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঠিক করার বৈঠকে যাননি। এই বিষয়টি তুলে ধরে সিপিএমের অভিযোগ, আগেভাগেই তৃণমূলের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছিল বিজেপির‌ তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের যাবতীয় তৎপরতা এড়িয়ে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল!

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সত্যিই কি দার্জিলিঙের চা চক্রে অসমের মুখ্যমন্ত্রী উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর এটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এর উত্তর কোনদিন জানা যাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়!

সম্পর্কিত পোস্ট