বিয়ের টোপ দিয়ে ২০ মহিলাকে ধর্ষণ ও খুন, অভিযুক্ত ‘সায়ানায়েড মোহন’-এর যাবজ্জীবন
সোমবার ম্যাঙ্গালুরুর ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সয়েদুন্নিসা এই সিরিয়াল কিলারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন।
দ্য কোয়ারি ডেস্ক : বিয়ের টোপ দিয়ে একের পর এক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করাই কুখ্যাত অপরাধী মোহনের নেশা এবং পেশা।
সায়ানায়েড মোহন -এর খুনের ধরন
প্রথমে বন্ধুত্ব ও পরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে মহিলাদের বিয়ের টোপ দিত মোহন। বেড়াতে নিয়ে যেত। এরপর ওই মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করত।
পরে একটি ট্যাবলেট দিয়ে বলত, ‘খেয়ে নাও, এটি জন্মনিরোধক বড়ি’। ওই ট্যাবলেট খেলেই মৃত্যু অনিবার্য। কারণ, সায়ানায়েড ট্যাবলেট দিত মোহন।
এভাবেই সে ২০ জন মহিলাকে ধর্ষণের পর খুন করেছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় মোহন।
কেরলের কাসারাগোদ জেলে থেকে আসা বছর ২৩-এর এক মহিলাকে খুনের মামলায় কুখ্যাত এই সিরিয়াল কিলার ‘সায়ানায়েড মোহন’-এর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে আদালত।
সোমবার ম্যাঙ্গালুরুর ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সয়েদুন্নিসা এই সিরিয়াল কিলারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন।
সায়ানায়েড মোহন এর শাস্তি ও জরিমানা
সেই সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন তিনি। মোহন অন্যান্য মামলায় জেল খাটার পরও এই সাজা বহাল থাকবে বলেও জানিয়েছেন বিচারক।
আরও পড়ুন : বেল দিয়েই জেল, জাতীয় নিরাপত্তা আইনে আটক ডা :কাফিল খান
যদিও এর আগেও পাঁচটি খুনের মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয় এবং অন্য তিনটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়।
পরে দুটি মৃত্যুদণ্ডের সাজা পরিবর্তিত হয়ে যাবজ্জীবন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সর্বশেষ মামলার চার্জশিট সূত্রে খবর, কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। মোহন তাঁর সঙ্গে আলাপ করে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্বও তৈরি করে ও প্রেমের সম্পর্ক হয় তাঁদের।
এরপর ওই মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় মোহন। ২০০৬ সালের ৩ জানুয়ারি মাইসুরু বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি লজে নিয়ে যায় প্রেমিকাকে।
অন্যান্য ঘটনাগুলোর মতো লজের ঘরে বসে প্রেমিকাকে গহনাগুলো খুলে রাখতে বলে মোহন।
এরপর প্রেমিকাকে নিয়ে শপিং-এ বের হয়। কেএসআরটিসি বাসস্ট্যান্ডে যায়।
সেখানে গিয়ে তাঁকে জন্মনিরোধক বড়ি খেতে বলে মোহন। আসলে সেটা সয়ানায়েড ট্যাবলেট।
ওয়াশরুমে গিয়ে ওই ট্যাবলেট খাওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তাঁর শিকার ওই মহিলা।
আরও পড়ুন : ক্ষুধা মুক্ত রাজ্য গড়তে মাত্র ২৫ টাকার বিনিময়ে খাদ্য দেবে কেরল সরকার
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় তাঁর।এরপর মোহন লজের ঘরে গিয়ে গহনাগুলো নিয়ে চম্পট দেয়।
এভাবে সে ২০ জন মহিলাকে বিয়ের টোপ দিয়ে ধর্ষণ করে খুন করেছে বলে অভিযোগ।
২০০৯ সালে বান্তওয়াল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে মোহন স্বীকার করে, সে ২০ জন মহিলাকে এভাবেই খুন করেছে।
এদিন আদালত কর্নাটকের ‘আক্রান্ত ক্ষতিপূরণ প্রকল্প’-এ ওই মহিলার মা’কে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জেলা আইনি পরিসেবা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।