মুখ্যমন্ত্রী নিজে যোগাযোগ না করায় অভিমান প্রকাশ করলেন মিহির গোস্বামী

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ “দীর্ঘ তিরিশ বছর অতিক্রম করার পর হঠাৎ বোধগম্য হয়েছে, এ দল এখন আর আমার দিদি-র দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই ‘দিদির লোক’ এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন”। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে এই পোস্ট করে বসলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। আরও একবার তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

ব্লক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিবাদের কারণে তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন মিহির বাবু। নিজের পার্টি অফিসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং তৃণমূলের চিহ্ন কিছুই রাখেননি। এমনকি দলনেত্রীর নির্দেশ এলেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তারপর দেড় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী নিজে যোগাযোগ না করায় অভিমান প্রকাশ করেন মিহির গোস্বামী।

তিনি বলেন, “সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ছয় সপ্তাহ কেটে গেছে। এই বিয়াল্লিশ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। বহু পুরনো রাজনৈতিক বন্ধুর ফোন পেয়েছি রাজ্যের বাইরে থেকেও। কেউ অফার দিয়েছেন, কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ শুধু ভালবাসা দিয়েছেন। সতীর্থ অনেক সহকর্মী নেতার ফোন এসেছে বাংলার নানা প্রান্ত থেকে, কলকাতা থেকে, সবার ফোন ধরা হয়ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত ছয় সপ্তাহে খোদ নেত্রীর কাছ থেকে কোনও ফোন আসেনি। কোনও বরখাস্তনামা কিংবা বহিস্কারের নির্দেশও আসেনি তাঁর কাছ থেকে”।

গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের খারাপ ফলাফলের পর নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরকে রাখেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যতই দিন যেতে শুরু করেছে ততই তৃণমূলের একাধিক জায়গায় দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে বিবাদ স্পষ্ট হয়েছে। খোলা মঞ্চে আইপ্যাক শিবিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। সূত্রের খবর, কোচবিহারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের যে চাপা ছাই ছিল, তা পুনরায় জ্বলতে শুরু করেছে। মিহির বাবুর কথাতেও সেরকম ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, “দলের ভেতর অজস্র অপমান অবমাননা ক্রমাগত সহ্য করে গিয়েছি অকারণে, চুপ করে থাকার জন্য শুভানুধ্যায়ীরাও বিরক্ত হয়েছেন বারবার। কিন্তু আমার উত্তর একটাই ছিল, দিদি! যার উপর বিশ্বাস-আস্থাতেই এতদিন টিকে ছিলাম”। মিহির বাবু আরও বলেন, “অন্যায্য সবকিছু মেনে নিয়ে ‘যো হুজুর’ করে টিকে থাকতে পারলে থাকো, নয়ত তফাৎ যাও”।

তৃণমূল থেকে সরে আসার পর থেকে একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা মিহির গোস্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন তা নিজেই জানালেন। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করবেন কি না সেবিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বললেন না। এই মুহুর্তে মিহির গোস্বামীর রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক কোন জায়গায়। কোচ রাজার গড়ে কি সত্যিই এবার বড়সড় পালাবদল? উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক মহল।

সম্পর্কিত পোস্ট