মোদিজীর কৃষকদের জন্য প্যাকেজ আসলে ফানুস ছাড়া কিছুই নয়: প্রদীপ মজুমদার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তিতে কৃষিক্ষেত্রকে ঘিরে একাধিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কৃষির পরিকাঠামো, পরিবহণ, বিপণন ক্ষেত্রের উন্নয়নে ১ লক্ষ কোটির আর্থিক পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

প্রচলিত কৃষিকাজ ছাড়াও মৎস্যচাষ, পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন ও বিপণন, মৌমাছি পালনের মতো ক্ষেত্রকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে কৃষিভিত্তিক তিনটি সংস্কারও। কেন্দ্রের এই ঘোষণাতে তেমন কিছু নতুন দেখছেন না মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার।

রবিবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি উপহাসের সুরে বলেছেন, কেন্দ্রের ঘোষণা তো কতগুলো সংখ্যা মাত্র। বাস্তবে কৃষি ক্ষেত্রে এর প্রভাব তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না। তাঁর অভিযোগ, কৃষকদের জন্য ঘোষণা আসলে ফানুস ছাড়া কিছুই নয়।

তিনি বলেন, কেন্দ্র ঘোষণা করেছে ২০ হাজার কোটি টাকা মৎস্য চাষে ব্যবহার করা হবে কিভাবে ব্যবহার করা হবে তার কোন ইঙ্গিত আমরা পাইনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণাতে কতগুলো শূন্য আছে ছোটবেলায় যখন অংক শিখেছি তখন শিখেছিলাম। কিন্তু সেই সংখ্যা ছাড়া কি করবে তার ব্যাখ্যা কি কেন্দ্র সরকার দিয়েছে! ফানুস উড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কৃষকদের দেখিয়েছেন এত কোটি টাকা তারা কৃষকদের দেবেন। কিন্তু কিভাবে দেবেন তার কোন ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দেননি। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই ঘোষণা করেছিলেন, মৎস্য চাষীদের কৃষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৪ শতাংশ সহজ সুদে ঋণ দেবে।

পরিযায়ীরাই করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হবে না তো!

তাঁর প্রশ্ন, আজ পর্যন্ত কতজন মৎস্যচাষী এই সুবিধা পেয়েছেন?এদের ঘোষণার সঙ্গে প্রকৃত লাভের কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই এই ঘোষণা অর্থহীন। তিনি বলেন কিন্তু আগেই ঘোষণা করেছিল, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা হবে। বাস্তবে তা হয়েছে কি?

এদিন কৃষকদের জন্য ঘোষিত লাইসেন্সিং প্রথারও সমালোচনা করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, যে সমস্ত কৃষকদের লাইসেন্স আছে তারাই নাকি বাজারে গিয়ে উৎপাদিত পণ্য বেচতে পারবেন। এমন কথা আগে শুনিনি। এতে কৃষকের কি কোনও লাভ হবে?

তাঁর মতে এতে বরং এতে মধ্যস্বত্বভোগী আরো বাড়বে।কেন্দ্র এখন বলছে কৃষকদের থেকে ক্রেতাদের কাছে তাদের উৎপাদিত পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীদের বিলুপ্ত করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক্ষেত্রে আগেই পদক্ষেপ নিয়েছে। গোটা রাজ্যে সফলভাবে এই কাজ করছে সুফল বাংলা স্টলগুলি মাধ্যমে। এর মাধ্যমে সরাসরি কিষাণ মান্ডি গুলিতে পণ্য সরাসরি বিক্রি করতে পারেন কৃষকেরা। আসলে কেন্দ্র যা করেছে তাতে আরো মধ্যস্বত্বভোগী বাড়বে।বড় বড় বিপণন সংস্থা কৃষি ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা দেখাবে। তাদের আটকানোর জন্য আর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না, তারা যতখুশি কিনে পণ্য মজুদ করতে পারবেন। এতে কৃষকের লাভ হবে না। লাভ হবে বড় ব্যবসায়ীদের।

সম্পর্কিত পোস্ট