টাকার পাহাড়, সঙ্গে নারী! জনতার আদালতে বিচার হয়েই গিয়েছে পার্থর
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ জনতার আদালত শব্দটা হরবখত রাজনীতিবিদরা ব্যবহার করে থাকেন। কিছু হলেই তাঁরা দেশের আইন-আদালত ছেড়ে এই জনতার আদালতের কথা টানেন। এটা আর কিছুই নয়, ভোটের ফল। কিন্তু আমরা অন্য এক জনতার আদালতের কথা বলব।
যেখানে, ধারণাই সব। যাকে বলে পারসেপশন বা ধারণা। আপনার সম্বন্ধে মানুষের এই পারসেপশন খারাপ হয়ে যাওয়ার পরও একটা-দুটো ভোটে জিততে পারেন, কিন্তু মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেন না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ কী তেমনই হতে চলেছে? আসুন, কয়েকটা ঘটনায় চোখ বুলিয়ে মূল বিষয়ে আসা যাক।
এন ডি তিওয়ারিকে মনে পড়ে? পুরো নাম নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি। তিনি দুটো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, যা অতি বিরল ঘটনা। প্রথমে অবিভক্ত উত্তরপ্রদেশ, রাজ্য বিভাজনের পর উত্তরাখণ্ডেরও মুখ্যমন্ত্রী হন। কংগ্রেসের বড় নেতা ছিলেন। ইন্দিরা পুত্র সঞ্জয় গান্ধির ডানহাত ছিলেন বলা চলে।
তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল রাজীব গান্ধীর আকস্মিক প্রয়াণের পর প্রবলভাবে তার নাম আলোচনায় ভেসে উঠেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত নরসীমার রবে চলে মাত হয়ে যান। এর পর রাজ্যপালও ছিলেন। এমন এক হেভিওয়েট নেতাই কিনা বুড়ো বয়সে যৌন কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যান!
তাঁর সেক্সটেপ ভাইরাল হয়েছিল। পরে রোহিত নামে এক যুবককে সন্তানের স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন এন ডি তিওয়ারি। কারণ বৈধ স্ত্রীর সঙ্গে কোনও সন্তান না থাকলেও ঘনিষ্ঠতার ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তাঁর প্রেমিকা! পরে সন্তানও হয়। তারই নাম ছিল রোহিত। এসবই বিয়ের পরের পর্যায়ের গল্প।
এই ঘটনার পর আর রাজনীতির ময়দানে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি। এমন এক হেভিওয়েট রাজনীতিবিদ শেষ বয়সে কার্যত লজ্জায় লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান। বাধ্য হয়ে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিল নিজের দল কংগ্রেস।
এ দেশে কোটি কোটি টাকা দুর্ণীতি করলেও সমাজ খুব একটা খারাপভাবে নেয় না। অন্তত রাজনীতির ময়দানে সবসময় এর প্রভাব যে পড়ে না তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। কিন্তু যৌন কেলেঙ্কারি বা নারী ঘটিত কেচ্ছা ছড়ালেই গেল। শুধু ছি ছি নয়, কার্যত সামাজিক বয়কটের সম্মুখীন হতে হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিণতিও কী তাই হবে?
ইডির আর্জি মেনে পার্থকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আদালতের, ডিভিশন বেঞ্চে গেলেন মন্ত্রী
দেখুন, আর্থিক দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আদৌ জড়িত কিনা, তিনি সত্যিই টাকার বিনিময়ে অন্যদের চাকরি দিয়েছেন কিনা তা আদালতে প্রমাণ হতে হবে। তাছাড়া এই বিষয়টি নিয়ে নানান দৃষ্টিকোণ, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে দিব্যি একটা শ্রেণীর কাছে নিজেকে শহিদ বানিয়ে ফেলতেই পারেন তিনি। কিন্তু অর্পিতা, মোনালিসা সহ আরও আরও যে মহিলাদের নাম উঠে আসছে তাঁকে জড়িয়ে সেগুলোর কী হবে?
এই মহিলাদের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন, আদৌ ঘনিষ্ঠ ছিলেন কিনা বা তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের মাত্রা কী সেটা নির্দিষ্ট করে আমরা কেউই জানি না। সত্যিই আমি, আপনি কেউ জানি না। কিন্তু প্রায় সবাই সচেতনভাবেই ধরে নিয়েছেন স্ত্রীর মৃত্যু সত্ত্বেও একেরপর এক নারীর সঙ্গে জড়িয়েছেন এই হেভিওয়েট রাজনীতিবিদ!
এই কলঙ্ক থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে? কঠিন শুধু নয়, বলা যায় এটা প্রায় অসম্ভব। কারণ মানুষের এই ধারণা কোনও আইন বা আদালত তৈরি করেনি, তা সমাজ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গড়ে উঠেছে রাতারাতি। একে খণ্ডাবে কে?