পুরুলিয়ার রুক্ষ মাটিতে পালাবদলের ইঙ্গিত, অভিষেকের ভরসা নবেন্দুতে
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নবেন্দু মাহালী। পুরুলিয়ার মাটিতে নামটা বহুল পরিচিত। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের সময় পুরুলিয়ার মাটিতে নবেন্দুকে নিয়ে রাজনৈতিক উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। কারণ বয়সে নবীন, সুবক্তা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্য পুরুলিয়ার রুক্ষ মাটিতে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে পদ্ম উপড়ে ঘাসফুল ফোটাতে সাহায্য করবে, ভেবেছিলেন অনেকেই।
লড়াই সেয়ানে সেয়ানে হলেও গেরুয়া শিবির জয় ছিনিয়ে নেয়। তারপর নবেন্দুকে তেমনভাবে আর প্রথম সারিতে দেখা যায়নি। বেশ কয়েকদিন রাজনৈতিকভাবে চুপচাপ ছিলেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তার নাম নতুন করে পুরুলিয়ার রাজনীতিতে আসতে শুরু করে।
তার ঘনিষ্ঠ কর্মী সমর্থকেরা অনেকই আশা করেছিলেন বান্দোয়ান বা মানবাজার থেকে তাকে হয়তো তৃণমূল কংগ্রেস টিকিট দিতে পারে। কিন্ত তা হয়নি। বিষণ্ন নবেন্দু সেসময় নীরব থেকে যান।
এরপর নিজের মতো করেই পুরুলিয়ার মাটিতে দল শক্ত করার কাজ শুরু করেন। মিষ্টভাষী এবং পুরুলিয়ার ভাষা সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান সুবিস্তৃত। তা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেস নবেন্দু মাহালিকে সেরকমভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। সেখানে শান্তিরাম মাহাত, সন্ধ্যারানী টুডু, গুরুপদ টুডুদের রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে গিয়েছিল নবেন্দু মাহালীর উত্থান।
তবে হাল ছাড়েননি তিনি। লড়াই চালিয়ে গেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। একুশে নির্বাচনে বিজেপি যখন পুরুলিয়ার মাটিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিজেপি, তখন টিকিট না পেলেও নবেন্দুই ছিল শেষ আশা।
অসমে আতর সম্রাটের হাত ছাড়ছে কংগ্রেস
দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক চেতনায় নবেন্দু মহালি নতুনভাবে রাজনৈতিক জমি ফিরে পেলেন। এজন্য তাঁর নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি। যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন সেটাও কম নয়। পুরুলিয়া শহর সাজানো ও সৌন্দর্যায়ন, কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগ এই সমস্ত বিষয়গুলি এখন তারই দায়িত্ব।
নবেন্দু মাহালি বর্তমানে পুরুলিয়া পৌরসভার পৌরপ্রশাসক। এই পদটা পেতে অনেকগুলো দুর্যোগ তাঁকে পেরোতে হয়েছে। তবে পুরুলিয়ার মাটিতে গুঞ্জন , অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবেন্দুকে মনে রেখেছেন। তাই পুরুলিয়া পৌরসভার পৌর প্রশাসকের পদ নবেন্দু মাহালিকে নতুনভাবে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা এনে দেবে নিঃসন্দেহে।
সামনেই পুরসভার ভোট হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকলেও তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে আগে উপনির্বাচন সম্পন্ন হোক। তারপর রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভার নির্বাচনগুলো তারা করতে চাইছেন। তাই নবেন্দুর হাতে বেশ কিছুটা সময় রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যেই পুরুলিয়ার মানুষের মন জয় করার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে বর্তাবে। এখন দেখার নবেন্দু মহালি সেই কাজ করতে পারেন কিনা। যদি পারেন তাহলে পুরুলিয়ার মানুষ তাঁকে মাথায় তুলে রাখবেন। নাহলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। এটাই রাজনীতির পাটিগণিত।