সংগঠন মজবুত করে পুরভোটে বিরোধীদের টেক্কা দিতে গোপাল শেঠেই আস্থা দলের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বনগাঁর ২২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়। এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হওয়ার পর চেয়ারম্যান করা হয়েছিল শঙ্কর আঢ্যকে। মুকুল রায় বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর আস্তে আস্তে ভাঙ্গন শুরু হয় বনগাঁ তৃণমূলে।
একদিকে কাউন্সিলারলা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা পোষণ করতে শুরু করেন। সেইসঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠে আসতে থাকে। ২০১৯ সালের মে মাসে ১৩ জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে।
তারপর ধ্বনি ভোটে কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যান শঙ্কর আঢ্য। তবে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বারবার উঠে আসছিল বনগাঁ পৌরসভার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ।
সেই সঙ্গে বনগাঁ মহকুমা এলাকায় সংগঠন ক্রমশ তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে বলে অভিযোগ করতে শুরু করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বনগাঁয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিধানসভা নির্বাচনে বনগাঁ মহকুমার ফল খারাপ হওয়ার পরেই ক্রমশ শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় আরও জমতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবারই বনগাঁ পৌরসভার প্রশাসক শঙ্কর আঢ্যকে সরিয়ে সে জায়গায় নিয়ে আসা হল তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠকে। বুধবার তিনি সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব পেয়ে গোপাল শেঠ নেমে পড়েছেন মাঠে।
যত্রতত্র পড়ে পিপিই কিট, হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সরব রোগীর পরিজনেরা
তাঁর কাছে আমাদের প্রশ্ন ছিল, কিভাবে বিগত দিনে যে সমস্ত অভিযোগ উঠে এসেছিল তা সরিয়ে নতুনভাবে কর্মীদের চাঙা করতে এবং সংগঠনকে পুনরুদ্ধারের কাজে কীভাবে করবেন?
তিনি বললেন, বিগত দিনে অনেক অভিযোগ উঠে এসেছিল। আমি দায়িত্ব নিয়েছি এখন। দল আমাকে ভরসা করে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা উপযুক্ত পালন করার চেষ্টা করব। চেষ্টা করব নতুন করে সংগঠন তৈরি করতে এবং পৌরসভার সমস্ত অসমাপ্ত কাজগুলোকে অতি দ্রুত তৎপরতার সঙ্গে শেষ করতে।
২০১৫ সালের পর থেকে বনগাঁ পৌরসভার বেশ কিছু জায়গা থেকে আস্তে আস্তে অভিযোগ উঠতে থাকে। আগে তা ছিল না। সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চল বনগাঁ। তবে সেটা পুরসভা এলাকার মধ্যে পড়ে না। তা সত্ত্বেও যে কোনো রকম অবৈধ পাচার বা অসামাজিক কাজকর্ম যাতে না হয় সেদিকেও তিনি কড়া নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ পৌরসভা এলাকায় ব্যাপকভাবে পরাজিত হয় তৃণমূল। এরপরে শঙ্কর আঢ্যকে সরানোর দাবিতে সরব হয় দলের একাংশ।
রাজনৈতিক মহলের মতে গোপাল শেঠ দক্ষ সংগঠক। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক। সবকিছু ঠিক থাকলে আর কয়েক মাসের মধ্যেই পৌরসভা ভোটের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাবে। তার আগে প্রয়োজন দক্ষ প্রশাসকের। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি বনগাঁকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে পারবেন বলে আশাবাদী শাসক শিবির।