নব প্রজন্মের মুখে মমতার ‘নেত্রী’ হওয়ার গুনগান, কীভাবে দেখছেন পক্ককেশী বামেরা?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় হচ্ছেটা কি ? শীত আসতে এখনো বাকি। শরৎ আসবে আসবে বলছে। যেখানে জমে মেঘ, সেখানেই হচ্ছে বৃষ্টি।  এই বৃষ্টি অবশ্য অজন্তা বিশ্বাসের পর আরেকনেত্রী দীপ্সিতা ধরের।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মহিলা রাজনীতিবিদ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি কেমন ভাবে দেখেন? এই প্রশ্নের উত্তরে দীপ্সিতার উত্তর, সোজাসাপটা। সাধারন মানুষের কাছে নিজেকে নেত্রী হিসাবে তুলে ধরতে সফল হয়েছেন। ব্যক্তিগত স্তরে তাঁর সঙ্গে পরিচয় নেই। তাই বেশি মূল্যায়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে না করলেও বাস্তব এটাই, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তাকে নেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

দীপ্সিতার কথায়, তিনি মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের কাছে লড়াইয়ের অবশ্যই কারণ বিজেপি ও তৃণমূল। কিন্তু তার থেকেও বড় কথা, মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান মুখ মমতা। তিনি যে সফল সেটা সাধারণ মানুষের মূল্যায়ন থেকে পরিষ্কার। তাঁর এই সাফল্য নিজের যোগ্যতায়। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পথ অতিক্রম করে তৈরী হয়েছেন তিনি।

দীপ্সিতা এই প্রজন্মের আধুনিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের ভাবধারা প্রভাবিত। তাই অজন্তা বিশ্বাসের মতো তাঁরও বক্তব্যে আলিমুদ্দিনের তর্জনী গরম হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বাস্তব এটাই, একজন মহিলা নেত্রী হয়ে দক্ষিণপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে এই উক্তি নতুন করে আলিমুদ্দিনের সেন্সরের খপ্পরে পড়বে না তো ?

অজন্তার ক্ষেত্রে যা হয়েছে। আসলে বঙ্গ রাজনীতিতে বামেদের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারা তৈরি করে দিয়েছে। যাদের মধ্যে অজন্তা বিশ্বাস একজন। এই তরুণ প্রজন্মের সমাজ যারা সমাজ ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা ও সামাজিক অবস্থানের মধ্য দিয়ে লড়াই করেছেন। তাদের সমালোচনা ও প্রশংসা দুটোই কাম্য।

আসলে বামেরা এখনো মনে প্রানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানতে চান না। বিরোধী হলেও বহু বামনেতা মমতার মধ্যে বামপন্থী আন্দোলনের বীজ দেখতে পান। যদিও পক্বকেশ বামপন্থীরা না মানলেও নতুন প্রজন্মের টাটকা রক্তের যারা রাজনৈতিক আন্দোলন করেন তারা এটা মানেন।

বামেরা গণআন্দোলনের পথ বিশ্বাস করলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনোই অনুপ্রেরণার বীজ হতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন না। তা সত্ত্বেও দীপ্শিতা ধর যে কথাটি বলছেন, তাতে বামপন্থীদের ক্ষেত্রে একটু অস্বস্তি হলো বটে।

একুশে বিধানসভা নির্বাচনে দীপ্শিতা বালি কেন্দ্র থেকে হেরে গেছে ঠিকই। নজর  কাড়ার মতো প্রচার পর্ব ছিল তাঁর। এই বঙ্গবাম নেত্রী বিরোধী নেত্রীর আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রসারতা যাচাই করে নিতে চাইছেন।

এখন দেখার অজন্তা বিশ্বাসের মতো দীপ্শিতাকে কোন শাস্তির শিকার হতে হয় নাকি। বিরোধী নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য যাই করুক না কেন বামপন্থীদের কাছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় বলে আলিমুদ্দিন মনে করে।

আসলে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ধারা বিভিন্ন উপশিরায় প্রভাবিত হয়েছে। তার সঙ্গে বাস্তবায়িত হয়েছে মমতা নামক এক মুখ। সেই মুখের শ্রদ্ধা করুক না করুক তাকে যদি শুধু আলোচনার টেবিলে রাখা হয় তাহলে বামপন্থী ছাত্র-যুবদের কাছে দীপ্শিতা ধরের এই বার্তা নিশ্চয়ই অর্থ খুঁজে দেবে।

সম্পর্কিত পোস্ট