অবশেষে ফাঁসি হল নির্ভয়ার চার দোষীর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মধ্যরাতে শেষ চেষ্টা ব্যার্থ। শেষমেশ ঘোষিত সাজা অনুযায়ী ফাঁসি হল নির্ভয়াকাণ্ডে চার দোষীর। এদিন রাত তিনটে থেকেই তিহার জেলের সামনে ব্যানার, পোস্টার নিয়ে জমায়েত হন বেশ কিছু মানুষ। তাঁরা ব্যানার পোস্টার নিয়ে জেলের বাইরেই প্রতিবাদী শ্লোগান তুলতে শুরু করে। এরপর ৫ টা ৩৭ নাগাদ দোষীদের ফাঁসির খবর আসার পরেই পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়।

 

ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার একসঙ্গে চারজনকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হল। শুক্রবার নির্ধারিত সময়েই ফাঁসিকাঠে চড়ানো হয় চার আসামী পবন গুপ্ত, অক্ষয় ঠাকুর মুকেশ সিং এবং বিনয় শর্মাকে। ভোর সাড়ে পাঁচটায় একসঙ্গে চার অভিযুক্তের ফাঁসি দেন ফাঁসুড়ে । ফাঁসির পর দেহগুলি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এতদিন পর আমরা ন্যায়বিচার পেলাম। দীর্ঘ লড়ইয়ের পর আসামীদের ফাঁসিতে ঝোলানো হল। আজকের দিনটা দেশের সমস্ত মা বোনেদের জন্য উৎসর্গ করলাম। আমি এর জন্য সরকার এবং আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাই।


ফাঁসির পর এমনটাই জানালেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। “সুপ্রিম কোর্ট থেকে আসার পরেই আমি আমার মেয়ের ছবি জড়িয়ে ধরে বললাম আমি তুমি বিচার পাবে।”

ভারতের ইতিহাসে আজ একটি উদাহরণমূলক দিন তৈরি হল। কিন্তু এই সাজা অনেকদিন আগেই পাওয়ার কথা ছিল। এবার মানুষ বুঝবে যে কোনও সমস্ত দোষীরাই শাস্তি পাবে। এমনটাই জানালেন ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন এর চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা।

আদালতে নির্ভয়ার হয়ে লড়েছেন সীমা কুশওয়া। এদিন ফাঁসির পর নির্ভয়ার মায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিনিও।

নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিং জানিয়েছেন আজ দেশের সমাজ, দিল্লি পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমের জন্য এই বিচার আমরা পেয়েছি।

 

সাত বছর পর আজ দোষীদের শাস্তির পর নির্ভয়ার আত্মা শান্তি পাবে। যে কোনও দোষী কঠোর শাস্তি পাবে। এই বার্তা আজ দেশজুড়ে পৌঁছে গেল। জানালেন দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতি মালিওয়াল।

 

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে দিল্লি রাজপথে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয় নির্ভয়াকে। দিল্লি থেকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই ২৯ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নির্ভয়া। ভারতের ইতিহাসে যা ‘রেয়ারেস্ট অব রেয়ার’ বলে দাবী করা হচ্ছে। এতদিন পর গণফাঁসির সঙ্গে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার শেষ হল।

দীর্ঘ টালবাহানার পর চতুর্থ বারের জন্য ২০ মার্চ ঘোষিত হয় ফাঁসির তারিখ। এর আগে তিন বার ফাঁসির তারিখ পিছিয়েছে। তাই এবারেও সন্দেহ ছিল এই বারও ফাঁসি হবে কিনা।
আবারও কোনও আইনি ফাঁক বার করে সুযোগ নিতে পারে অপরাধীরা। এমনটাই আশংকা করছিলেন অনেকেই।

ফাঁসির দু’দিন আগে থেকেই কের পর এক আবেদন করেন দোষীরা । কিন্তু প্রতিবারেই তাঁদের প্রানভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। এমনকি ফাঁসির ঠিক আগে মধ্যরাতে শুরু হয় মহানাটক। মাঝরাতেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে পৌঁছলেন নির্ভয়া দোষীদের আইনজীবী এপি সিং। শুনানিও শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে।কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি।

 

সম্পর্কিত পোস্ট