প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, নীতীশ বিজেপির বিরুদ্ধে সক্রিয় নিজের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিজেপির হাত ছেড়ে দল নিয়ে ফের বিরোধী শিবিরে সামিল হয়েছেন নীতীশ কুমার। কিন্তু হাতে গরম মহারাষ্ট্রের কথা তিনি ভুলে যাননি। উদ্ধব ঠাকরের দুর্দশা তাঁর চোখ খুলে দিয়েছেন। বুঝেছেন, রাজ্যের ক্ষমতায় থাকাটাই সব নয়। দল ধরে রাখতে হলে বিজেপিকে দুর্বল করা প্রয়োজন। সম্ভবত সেই কারণেই বিরোধী দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আনতে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আরজেডি, কংগ্রেস ও বাম দলগুলোর হাত ধরে ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে ফিরেছেন। এরপরই জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয়তা যেন তুঙ্গে উঠেছে। এই সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তো পরমুহূর্তে সীতারাম ইয়েচুরি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ওমপ্রকাশ চৌচালাদের সঙ্গে দেখা করছেন।
বিরোধী শিবিরের আরেক মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কেসিআরের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সামনাসামনি বৈঠক না হলেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলছেন বলে সূত্রের খবর। এইসব দেখে কেউ কেউ মনে করছেন নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে তুলে ধরতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন নীতীশ।
কিন্তু পাটনার রাজনীতির অলিন্দে কান পাতলেই সম্পূর্ণ অন্য গল্প শোনা যাচ্ছে। জোট শরিক আরজেডি , কংগ্রেস বা বামদলগুলোকে নিয়ে নীতীশ কুমারের বিশেষ চিন্তা নেই। কিন্তু নিজের দল জেডি(ইউ)-তে বিজেপি যেকোনও মুহূর্তে ভাঙন ধরাতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।
রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বদলাচ্ছে কংগ্রেস? লক্ষ্যপূরণের পথে শচীন পাইলট
দীর্ঘদিন বিজেপির সঙ্গে জোটে থাকায় নীতীশের দলের অনেক বিধায়কের সঙ্গেই গেরুয়া শিবিরের সুসম্পর্ক আছে। তিনি বিজেপির হাত ছাড়ায় কিছু বিধায়ক ‘অসন্তুষ্ট’ বলে খবর। তবে নীতীশের সবচেয়ে মাথা ব্যথ্যার কারণ ইডি-সিবিআই।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করে বিজেপি সক্রিয় হলে জেডি (ইউ) এর একাংশ দল ভাঙতে পারে। কারণ নীতীশ ভালোই জানেন তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের লালুর দলের মতো অতোটাও সামাজিক ও জনভিত্তি নেই। তাই একটু চাপ পড়লেই তাঁরা রণে ভঙ্গ দিতে পারেন।
এই অবস্থায় বিজেপি দুর্বল হলে তবেই একমাত্র দল বাঁচাতে পারবেন নীতীশ। কোনওভাবে গেরুয়া শিবিরকে একটু অন্তত চাপে রাখতে পারলে তবেই ওরা সংযত থাকবে।
বিহারে যাতে কোনও একনাথ শিণ্ডে তৈরি না হয় তাই নীতীশ একদা ঘনিষ্ঠ আরপি সিংকে দল থেকে ইতিমধ্যেই বের করে দিয়েছেন। তবু বিপদ কোনদিক থেকে আসে তা তো বলা যায় না। তাই দল রক্ষায় এখন ‘অ্যাটাক ইজ বেষ্ট ডিফেন্স’ নীতি নিয়েছেন নীতীশ কুমার। এর সঙ্গে দিল্লির কুর্শির কোনও সম্পর্ক নেই।