আড়াই বছর ধরে নেই রক্ষণাবেক্ষণ, ৩৬ ঘন্টায় কাজ শেষ করা অসম্ভব! দুর্গাপুর ব্যারেজ বিপর্যয়ে রাজ্যকে তোপ আমজনতার
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বুধবার দুপুরে অবশেষে দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতভর কাজ করে ৩১ নম্বর লকগেটে জল ঢোকা বন্ধ করতে সফল হয়েছে সেচ দফতর।
যে ঠিকা সংস্থা লকগেট সারানোর কাজ করছে, ওই সংস্থার ম্যানেজার শ্যামলেন্দু পাল এদিন বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ লকগেট সারানোর কাজ শেষ হবে।’
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/even-before-amit-shahs-visit-mamata-gave-the-lease-of-matua/
এদিকে ততক্ষণে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন প্রায় তলানিতে পৌঁছবে বলে মনে করছেন সংস্থার ডিজিএম প্রবীর চাঁদ।বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিজিএম প্রবীর চাঁদ বলেন, “দু’টি ইউনিট বন্ধ করে দেওয়ায় জলের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়, আপাতত সে দিকে তাকিয়ে আমরা।”
দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২ ও বড়জোড়া ব্লকের বহু এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি, ব্যারাজের জলেই এমটিপিএস প্রকল্প ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের কলোনির বাসিন্দারা নির্ভরশীল। এমটিপিএস সূত্রে খবর, দৈনিক গড়ে যেখানে প্রায় ১,৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়, বুধবার হয়েছে ৯০০ মেগাওয়াট।
দুর্গাপুর ব্যারেজ বিপর্যয়ের এদিনের ঘটনায় এলাকার স্থানীয় মানুষরা রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রীর কথা বারবার বলছেন। কারণ ২০১৭ সালে যখন দুর্গাপুর ব্যারেজের ১ নম্বর লকগেট ভেঙেছিল তখন রাতারাতি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই কাজ শেষ করে প্রবল জলকষ্ট সহ একাধি্ক সমস্যা নিরসন করেছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেসময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকালিনক্যাল বিভাগের অধ্যাপকদের নিয়ে আসেন। তাঁরা এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরী করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যারেজের ৩৪ টি গেটের মধ্যে ১১ টি গেট পরিবর্তন করার কথা হয়েছিল। তালিকায় ছিল ৩১ নম্বর গেটটিও।
তাদের প্রশ্ন, আড়াই বছর হয়ে গিয়েছে তাও ১১ টি গেট পরিবর্তন হল না কেন? কেন কেন্দ্র সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে? এই বিপর্যয়ের গোটা দায় রাজ্য সরকারের। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণ না থাকার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/just-wait-for-a-while-then-amit-shah-will-arrive/
তাদের আরও অভিযোগ, এলাকায় কোনো মনিটারিং নেই। এত জল বেরিয়ে গেল তাতে আগামী দিনে সুখা মরসুম আসে তাহলে পানীয় জলের সঙ্কটে যেমন এলাকাবাসী ভুগবে, তেমনি চাষের কাজের জন্যেও জল পাওয়া যাবে না। যদি বৃষ্টির পরিমান পর্যাপ্ত না হলে ফল ভুগতে হবে।
স্থানীয় যুবকদের কথায়, গোটা এলকায় পুলিশের কোনো নজরদারী নেই। ভারী ট্রাক, লরি যাতায়াত করে ব্যারেজের উপর ব্রিজ দিয়ে। সেখান থেকে মোটা অঙ্কের তোলা আদায় করে পুলিশ। এমনকী প্রায়শই লকগেট খুলে মাছ ধরেন মৎসজীবীরা। যার ভাগ পান সেচ দফতরের অনেকেই। ফলে বিষয়গুলি সম্পর্কে অবহিত হওয়া সত্ত্বেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেচমন্ত্রী পদ থেকে চলে যাওয়ার পর কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সরকার।
পাশাপাশি এদিন বর্তমান সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের আশঙ্কা, সরকার বলছে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে ব্যারেজ সারাইয়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু যা অবস্থা রয়েছে তা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেলে লকগেট সারানোর কাজ যদি শেষ হয় সেক্ষেত্রে মাইথন জলাধার থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজে ৮ ফুট জল ভরতে সময় লাগবে আরও ৬ ঘন্টা। ফলে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। এখন দেখা যাক আদৌ সমস্যার সমাধান কবে হয়।