পানিহাটির দণ্ড মহোৎসবের জন্য আদৌ প্রস্তুত ছিল প্রশাসন?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ভক্ত রঘুনাথ দাস গোস্বামী তাঁকে মিথ্যে বলায় শাস্তি দিয়েছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। কী সেই শাস্তি? বাকি শিষ্যদের দই-চিড়ে খাওয়ানোর দণ্ড তথা নির্দেশ দেন চৈতন্যদেব। সেই শুরু দণ্ড মহোৎসবের। পানিহাটিতে পাঁচশ বছর ধরে চলে আসছে এই উৎসব।
কিন্তু সেখানেই এবার ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার। রবিবার উৎসবের প্রথম দিনই ব্যাপক ভিড় হয়। সেই ভিড়ের চাপে, প্রবল গরমে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন পূণ্যার্থীর। কিন্তু এই মর্মান্তিক ঘটনা কার বা কাদের ব্যর্থতায় ঘটল? আশ্চর্যজনকভাবে সবাই দায় এড়াতেই ব্যস্ত।
করোনার জন্য গত দু’বছর দণ্ড মহোৎসব হয়নি। এবছর সবকিছু মোটামুটি ঠিকঠাক থাকায় ফের উৎসবের অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। ফলে গত দু’বছরের আক্ষেপ এবার মিটিয়ে নিতে পুণ্যার্থীরা ভিড়ও করেন ব্যাপকমাত্রায়।
রবিবার যা পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার পুণ্যার্থীরা যে এতটা ভিড় করতে পারেন সে বিষয়ে প্রশাসনের ধারণাই ছিল না। এই প্রাথমিক ব্যর্থতার ফলেই প্রায় তিন লক্ষ মানুষের জমায়েত সামলানো যায়নি। পুলিশ, দমকল, স্বেচ্ছাসেবক, চিকিৎসা পরিকাঠামো, অ্যাম্বুলেন্স কিছুই পর্যাপ্ত মাত্রায় উৎসব প্রাঙ্গণ রাখা হয়নি।
রাজ্য জুড়ে হিংসাত্মক ঘটনায় রাজ্য জুড়ে ২০০ জন গ্রেফতার, দায়ের ৪২ টি মামলাঃ জাভেদ শামিম
অনেক বছর হল দণ্ড মহোৎসব পরিচালনা করছে পানিহাটি পুরসভা। ফলে এই দুর্ঘটনার জন্য সর্বপ্রথম তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে। সবচেয়ে বড় কথা এতো বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় হলে যে রাস্তা দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করা হয় তার উল্টো একটি রাস্তা দিয়ে তাদের বের করাটাই নিয়ম।
কিন্তু দণ্ড মহোৎসবে যে রাস্তা দিয়ে সবাই মন্দিরে ঢুকছিল সেই রাস্তা দিয়েই আবার বেরিয়ে যাচ্ছিল।ফলে একসময় ঠেলাঠেলি চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছয়। সেই সময় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলে হয়তো এত বড় ক্ষতি হত না। সব মিলিয়ে পাঁচশ বছরের বেশি পুরনো এই প্রাচীন উৎসবের গায়ে প্রশাসনিক গাফিলতিতেই কালো দাগ লেগে গেল।