ভগবান নয়, প্রবঞ্চকের মা,নির্মলাকে আক্রমণ অমিতের

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কোভিড পরিস্থিতিকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, ‘ভগবানের মার’। রবিবার তাঁর সেই কথার সূত্র ধরে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকাকে ‘প্রঞ্চকের মার’ বলে আখ্যা দিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

এদিন ওয়েবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি দাবি করেন, কথা রাখেনি কেন্দ্রীয় সরকার। অমিত মিত্র বললেন, ভগবান নয় প্রবঞ্চকের মার। ইউপিএ আমলে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলী বলেছিলেন, আমরা কেন্দ্রের জিএসটি নীতিকে সমর্থন করছি না, কারণ সেখানে জিএসটি অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে কিছু বলা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এনডিএ আমলেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। অতএব এক্ষেত্রে তাঁরা রাজ্যগুলির সঙ্গ প্রবঞ্চনা করছে।

অমিত মিত্র এ দিন সাফ জানান, জিএসটির ক্ষতিপূরণ না মিটিয়ে যে ভাবে রাজ্যকে ধার করতে বলা হচ্ছে। এটা আসলে কেন্দ্রের রাজ্যের সরকারকে বিপদে ফেলার কৌশল।

তাঁর মতে, এত পরিমান টাকা কোনও রাজ্য যদি ধার হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে রাজ্যের ঘাড়ে বিপুল পরিমান আর্থিক দেনা চাপবে। যার ফলে যে কোন রাজ্যের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। ভেঙে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোও। আর এই সুযোগে কেন্দ্রীয় সরকার সব কিছু কেন্দ্রীয়করণের এদিকে হাঁটবে।

তুমুল বর্ষণে ভাঙল ২১ বছরের রেকর্ড, মধ্যপ্রদেশে বন্যায় প্লাবিত ৪৫৪ টি গ্রাম

জিএসটি পরিষদে নির্মালা জানিয়েছিলেন, চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি থাকা রাজ্যগুলির থেকে আয় কম হবে। এর মধ্যে সেস থেকে আয় রয়েছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা কেন্দ্রের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়, সেটা ঋণ নিতে পারে রাজ্য। অথবা জিএসটি চালুর জন্য ক্ষতি ৯৭ হাজার টাকাও ঋণ নিতে পারে। কেন্দ্রকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে কোভিড। আর কোভিড ‘ভগবানের মার’। এভাবেই এ দিন ব্যাখ্যা করেছিলেন নির্মলা সীতারামন।

নির্মলার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রায় সব রাজ্যই। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে বেঁকে বসেছে। সেটাকেই হাতিয়ার করে এগোতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন অমিত মিত্র বলেন, এ নিয়ে সব রাজ্যকে এগিয়ে আসতে হবে। অমিতের প্রশ্ন, ক্ষতিপূরণ এড়াতে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত লিখিতভাবে কেন জানানো হলো না? তাহলে রাজ্য আইনি মতামত নিতে পারত।

উল্লেখ্য, পঞ্জাব, কেরল এবং দিল্লির অর্থমন্ত্রীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের এই প্রস্তাব তাঁরা মানছেন না। একই পথে হাঁটতে পারে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিও।

তিনি আরও জানান, নোট বাতিলের ৭ মাসের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে জিএসটি লাগু করার ফলে দেশের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২০১৬ সালে যেখানে জিডিপি ছিল ৮% তাড়াহুড়ো করে তা লাগু করার ফলে ২০১৯-২০ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৪.২% এ।

এক বছরে সারাদেশে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে অভিযোগ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের। এবার যদি জিএসটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ঋণ নিতে হয় তাহলে রাজ্যগুলো আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবে আর সেই সুযোগ নেবে কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ অমিত মিত্রের।

সম্পর্কিত পোস্ট