ভোট নয়, কৃষি আইন নিয়ে কথা হবে মহাসমাবেশেঃ হান্নান মোল্লা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের বিরোধিতায় দিল্লি উপকন্ঠে আন্দোলন জারি রেখেছেন কৃষকরা। ১০০ দিন পার করার পরেও আন্দোলন জারি রেখেছেন কৃষকরা। ঠান্ডা, বৃষ্টি এবার দিল্লি ঝাঁ ঝাঁ গরম। আন্দোলনের উত্তাপ পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছে দিতে উপস্থিত হচ্ছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। ১২ মার্চ কলকাতার রামলীলা ময়দানে সভা করার কথা রয়েছে তাঁদের।

বিষয়টি নিয়ে সর্বভারতীয় কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লার সঙ্গে কথা বলে দ্য কোয়ারি। তিনি বলেন, “দিল্লি উপকন্ঠে আন্দোলন অনেকটা সময় ধরে চলছে। সরকারের ষড়যন্ত্রের কারণে আজ আন্দোলন ১০০ দিন হচ্ছে।

সরকার চেয়েছিল আমরা আন্দোলন করে করে ক্লান্ত হওয়ার পর জায়গা ছেড়ে চলে যাবো। অথচ এটার প্রয়োজন ছিল না। সরকার চাইলেই একটু নমনীয় হয়ে আলোচনা করতে পারত।

কারণ, প্রজাদের সমস্যার সমাধান করাই সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু সরকার তা না করার ফলে আন্দোলন আরও দীর্ঘ চলছে। কিন্তু আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। সরকার না মানলে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

কৃষকরা একটা জিনিস বুঝতে পেরেছে সরকার না মানলে আমরা যাবো না। সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন চলছে এবং আরও চলবে”।

তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন দীর্ঘ হলে সেই আন্দোলনের প্রকৃতি ভিন্ন হয়। কখনও ধর্না, কখনও র‍্যালির মাধ্যমে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।

এখন সারা দেশজুড়ে ‘মহাপঞ্চায়েত’ কর্মসুচী চলছে। উত্তর ভারতে বলা হয় মহাপঞ্চায়েত। আমরা বলি জনসভা। যা দেশের একাধিক রাজ্যে শুরু হয়েছে। আসলে আমাদের মূল লক্ষ্য হল আমাদের যে প্রচার চলছিল, সেটাকে জনসমাবেশের মাধ্যমে চালিয়ে যাওয়া”।

আরও পড়ুনঃ বিজেপিকে পরাস্ত করতে বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার আর্জি অখিল গগৈয়ের

ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক জায়গায় ‘মহাপঞ্চায়েত’ করেছেন কৃষকরা যেখানে প্রায় ১ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব সরকারের ওপর পড়েই। সেজন্যই সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার তরফে স্থির করা হয়েছে, এই জনসভা চলছে এবং তা চলতে থাকবে।

উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থানের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, কেরল এবং এরপর মেওয়াড়ে হওয়ার কথা রয়েছে এধরনের জনসভার।  এমনকি বিজেপি শাসিত কর্ণাটকেও হবে এধরনের জনসভা। তবে প্রত্যেকটি রাজ্যে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সংগঠনে যারা রয়েছেন তাঁরাই এই জনসভার আয়োজন করবেন।

কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে নয়, একমাত্র কৃষকদের সমস্যার কথাই জানানো হবে জনসভায়।

পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য নির্বাচনের মুখে কেন এই জনসভা? এবিষয়ে হান্নান মোল্লা জানান, এই নির্বাচন আমরা ঘোষণা করিনি। ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন ঘোষণা করা মানে এই নয় ওই পাঁচটি রাজ্যে কৃষকদের সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে।

আমরা প্রচার করছি এই সরকার কৃষক বিরোধী সরকার। কেন্দ্র সরকারের কৃষক বিরোধী নীতির কথা আমরা প্রচার করছি। আমরা বলছি এই ‘কালা কানুন’ প্রত্যাহার করো। আর নাহলে এই সরকারকে তাড়াও”।

একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা পাঁচ মাস, সাত মাস ধরে আন্দোলন চালাচ্ছি। এখন ভোটের মুখে সব বদলে যাবে এমনতা ভাবার কোনও কারণ নেই। এই ক্যাম্পেন সারা দেশে হচ্ছে। যেখানে ভোট হচ্ছে আমরা সেখানে যাবো।

আমাদের একটাই দাবী, কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার যে ‘কালা কানুন’ এনেছে তা কৃষক বিরোধী। যারা এই আইন এনেছে, তাঁরা কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে তাঁদেরকে হটাও”।

কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতার স্পষ্ট বার্তা, “যে সমস্ত রাজ্যে ভোট হওয়ার কথা সেখানে গিয়ে আমরা বলব না তোমরা একে ভোট দাও। কাকে ভোট দেওয়া হবে, এরকম কোনও কথা আমাদের কোনও নেতা বলবে না।

ভোটাররা কাকে ভোট দেবে, সেবিষয়ে তাঁরা সচেতন। আমাদের মূল লক্ষ্য হল সরকারের কৃষক বিরোধী আইনের মুখোশকে খুলে দেওয়া।

 

সম্পর্কিত পোস্ট