নজর ঘোরাতেই নতুন ইস্যু NRCও CAA , বলছেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ

এনআরসি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পরিবর্তন। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। আতঙ্কিত আমজনতা। এহেন রাজনৈতিক জটিলতায় Thequiry কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন কোচবিহার তৃণমূল জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ।

কোচবিহার তৃণমূল জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ

এনআরসি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পরিবর্তন। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। আতঙ্কিত আমজনতা। এহেন রাজনৈতিক জটিলতায় Thequiry কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন কোচবিহার তৃণমূল জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ।

এনআরসি ও সিএএ নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। রাজপথে আন্দোলন নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবছেন গোটা বিষয় নিয়ে?

পঙ্কজ ঘোষঃ এই দুটি বিষয়ে দলের স্ট্যান্ড কী হবে সেটা মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর সৈনিক হিসাবে তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাই।

তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমার যেটা মনে হয় এই দুটি বিল আনার আগে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ বর্ডার সংলগ্ন রাজ্যগুলির সঙ্গে একবার আলোচনা করে নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ যারা বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসছেন তারা থাকছেন পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। আবার পাকিস্তান থেকে যারা আসছেন তারা মূলত রাজস্থানে থাকছেন।

যদি বর্ডারসংলগ্ন রাজ্যগুলিকে গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে একত্রিত করা যেত, তাহলে যে সিদ্ধান্তই হোক না কেন তা অনেকটা সহজসাপেক্ষ হত।

আজ যাকে এদেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে কে বলতে পারে সরকার পরির্তনের পর ফের তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে না।

এনআরসিকে কেন্দ্র করে যে আতঙ্ক পশ্চিমবঙ্গে তৈরী হয়েছে তাতে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। উত্তরবঙ্গেই এই সংখ্যা বেশী। এর দায় কার?

পঙ্কজ ঘোষঃ এর দায় নিতে হবে কেন্দ্র সরকারকে। রাজ্য সরকার সব রকম ভাবে চেষ্টা করেছেন আমজনতার পাশে থাকার। চেষ্টা করেছেন আতঙ্কিত মানুষদের আশ্বস্ত করতে। মুখ্যমন্ত্রী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকলের পাশে থাকছেন কিন্তু তারপরেও যেসব পরিবারগুলি তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, সেই দায় নিতে হবে কেন্দ্রকে।

আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: উপত্যকার আত্মকথা, বলছেন চৌধুরী মহম্মদ আক্রম

এই মুহুর্তে দেশের অর্থনীতির হাল নিম্নগামী। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। সেক্ষেত্রে এনআরসি ও সিএএ আইন দিয়ে আমজনতার মোড় ঘোরাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার?

পঙ্কজ ঘোষঃ একদমই তাই। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপির প্রথম পদক্ষেপ ডিমনিটাইজেশন। কোনো রকম আগাম পরিকল্পনা ছাড়া বিজেপির এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হল। তা প্রমাণিত। এরপর তড়িঘড়ি চালু করা হল জিএসটি। দেশের অর্থনীতি যে ধুঁকছে তার প্রমাণ জিডিপি। কোনো পরিকাঠামো ছাড়াই একের পর এক পরিকল্পনা দেশের অর্থনীতিতে কুঠারঘাত। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক এটা নিয়ে একটা জার্নাল প্রকাশ করেছে।

গোয়েন্দা সংস্থা জঙ্গিহামলার সতর্কতায় রিপোর্ট জমা দিলেও তা উপেক্ষা করেই সড়কপথে জওয়ানদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলওয়ামা অ্যাটাকের মাধ্যমে গোটা দেশের মিডিয়ার অ্যাটেনশন ঘুরিয়ে দেওয়া হল। আমজনতার মধ্যে সেন্টিমেন্ট তৈরী করে লোকসভা নির্বাচন পার হয়ে গেল। তারপর ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, এনআরসি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ। সবমিলিয়েই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।

দেশের যুব সমাজকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে কী বার্তা দেবেন?

পঙ্কজ ঘোষঃ নতুন বছরে সবাই ভাল থাকুক। নতুন করে কাজে উদ্যমী হোক সকলে। তবে সবাইকে বলব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির দিকে নজর দিক সকলে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করব নতুন করে পরিকাঠামো তৈরীর জন্য। সবশেষে বলব দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে তাদের এগিয়ে আসা অত্যন্ত প্রয়োজন।

সম্পর্কিত পোস্ট