Subrata Mukherjee: খসে পড়ল প্রিয় -সুব্রত-সোমেন জুটির শেষ তারা, তীক্ষ্ণ রসবোধ সম্পন্ন রাজনীতিকের অনুপস্থিতিতে শোকের ছায়া
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ প্রিয় -সুব্রত-সোমেন জুটির শেষ স্তম্ভটিও দীপাবলির (Dipaboli) রাতে খসে পড়ল। কংগ্রেসী ঘরানার রাজনীতিতে প্রিয়-সুব্রত জুটির কথা আজও অক্ষয় অমর। ছাত্র পরিষদের (Chatra Parishad) হাত ধরে বাংলার রাজনীতিতে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) উত্থান।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন। সিপিএমের ছাত্রসংগঠন বিপিএসএফ (BPSF) পাল্টা ছাত্র পরিষদ তাঁর নেতৃত্বেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলে চলে যান। কিন্তু আমৃত্যু কংগ্রেসী ঘরানার রাজনীতি করে গিয়েছেন।
১৯৪৬ সালের ১৪ জুনঃ বজবজ এলাকার সারেঙ্গাবাদে জন্ম তাঁর। কলেজে পড়তে পড়তেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কলকাতায় আগমন। শিয়ালদহের বঙ্গবাসী কলেজে পড়ার সময় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই সূত্রেই ঘনিষ্ঠতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে।
সত্তরের দশকে প্রিয়-সুব্রত জুটি হয়ে উঠেছিল বাংলার ছাত্র রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত নাম।‘প্রিয়দার ডানহাত’ থেকে সুব্রত হয়ে উঠেছিলেন খোদ ইন্দিরা গান্ধীর প্রিয়পাত্র।
১৯৭১ সালঃ ২৫ বছর বয়সে বালিগঞ্জ থেকে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই জয়। ওই সময়েই কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের সভাপতিও হয়েছিলেন সুব্রত।
১৯৭২ সালঃ ফের বালিগঞ্জ থেকে জিতে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হন সুব্রত। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বাংলার রাজনীতিতে সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হওয়ার সেই রেকর্ড এখনও তাঁর দখলেই।
১৯৭৭ সালঃ ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের সময় সুব্রতও হেরে যান।
১৯৮২ সালঃ বিধানসভা ভোটে আসন বদল করে চলে যান উত্তর কলকাতার জোড়াবাগানে। সেখান থেকে পরপর তিনবার জেতেন।
১৯৯৬ সালঃ ভোটে দাঁড়ান চৌরঙ্গি থেকে। জয়লাভ করেন সেখানেও।
২০০০ সালঃ কংগ্রেস ছেড়ে সুব্রত যোগ দেন তৃণমূলে। ওই বছর কলকাতার পুরভোটের সময় কংগ্রেসের বিধায়ক পদ ধরে রেখেই ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়ান। জেতেন এবং কলকাতার মেয়র হন।
২০০১ সালঃ কলকাতার মেয়র পদে থেকেই চৌরঙ্গি থেকে তৃণমূলের বিধায়ক হন সুব্রত।
দীপাবলির রাতে বঙ্গ রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন , প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়
২০০৪ সালঃ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে কলকাতা উত্তর-পশ্চিম লোকসভা থেকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে তৃণমূলের প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ হাজার ভোটে বাম প্রার্থী সুধাংশু শীলের কাছে হেরে যান সুব্রত।
২০০৫ সালঃ তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে তৃণমূল ছেড়ে পৃথক মঞ্চ গড়েন। এনসিপি-র ‘ঘড়ি’ চিহ্ন নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করেন পুরভোটে। সুব্রত নিজে জিতলেও ধরাশায়ী হয় তাঁর মঞ্চ।
২০০৬ সালঃ চৌরঙ্গি থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে সুব্রত হেরে যান।
২০০৮ সালঃ কংগ্রেসে থেকেও সিঙ্গুরে মমতার ধর্নামঞ্চে যোগ দিতে গিয়ে চমকে দেন সকলকে।
২০০৯ সালঃ কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের হয়ে ‘হাত’ প্রতীকে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন। কিন্তু পরাজিত হন সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়ার কাছে।
২০১০ সালঃ পুরভোটের সময় কংগ্রেস ছেড়ে ফের সুব্রত যোগ দেন তৃণমূলে।
২০১১ সালঃ তৃণমূলের প্রতীকেই বালিগঞ্জের বিধায়ক হন। মমতার প্রথম মন্ত্রিসভায় জায়গাও হয় তাঁর। ২০১৬ এবং ২০২১ সালঃ ওই কেন্দ্র থেকেই জিতে আমৃত্যু মন্ত্রিসভায় ছিলেন তিনি।