কাকা-ভাইপোর লড়াইয়ে কালো মেঘ এলজেপি আকাশে
|| শুভজিত চক্রবর্তী ||
নিজের ঔদ্ধত্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নীতিশ কুমারকে জব্দ করতে চেয়েছিলেন চিরাগ পাসোয়ান। কিন্তু সমস্য বদলে সেই ঘটনা এখন বুমেরাং হয়েছে তাঁর দিকেই। নীতিশের বদলার কারণে দলের সমস্ত পদ হারাতে পারেন চিরাগ পাসোয়ান।
সোমবার সকাল থেকে ৫ সাংসদের শিবির বদলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে পড়শি রাজ্যের রাজনীতিতে। সামাল দিতে ওই দিন সকালেই কাকা পশুপতি কুমার পারসের বাড়িতে উপস্থিত হন। কিন্তু প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করার পরেও কাকা পশুপতির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাননি৷
ওই দিন সন্ধ্যেবেলায় লোকসভার দলনেতা হিসাবে চিরাগের পরিবর্তে পশুপতি, যিনি রামবিলাসের ডান হাত বলেই পরিচিত তাঁকে সমর্থন জানান ৫ জন সাংসদ। স্পিকার ওম বিড়লাকে জানিয়েছেন তাঁরা।
পড়শি রাজ্যে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে গত বছর রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পর এলজেপি প্রধানের যে পদ চিরাগ পেয়েছিলেন, তা খুব শীঘ্রই হারাতে চলেছেন। পরিবর্তে দলের দায়িত্ব পেতে পারেন চিরাগের মা। আবার লোকসভার দলনেতা হতে পারেন কাকা পশুপতি। কিন্তু এখনও এই জল্পনা কতদুর গড়াবে তা আন্দাজ করা মুশকিল।
কিন্তু এই অন্তঃদ্বন্দ্বের শুরু কোথায়? শোনা যায়, বিহার নির্বাচনে জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন চিরাগ নিজেই। এর পিছনে চিরাগের উপদেষ্টা সৌরভ পান্ডের উপদেশ রয়েছে বলে জানান তিনি। দলের আর কারোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি।
এনডিএ শিবিরে থেকেও শরীক দলের এই স্পর্ধা মেনে নিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
মাত্র একটি আসন পেলেও প্রায় ৩২ টি আসনে ভোট বাটোয়ারা হয়েছে জেডিইউ এবং এলজেপির মধ্যে। ফায়দা তুলে এনডিএ শিবিরে সর্বাধিক আসন পায় বিজেপি। এমনকি বিরোধী দল আরজেডি অনেকটা সুবিধা পায়। তখন থেকেই চিরাগকে যোগ্য জবাব দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার৷
মঙ্গলবার বিকেলে দিল্লি সফরে রাজ্যপাল
সম্প্রতি মোদি মন্ত্রীসভার বন্টন নিয়ে জোর জল্পনা চলে। স্বাভাবিকভাবেই শরীক দল হিসাবে রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পর মোদির নতুন মন্ত্রীসভায় জায়িগা পাওয়ার কথা ছিল চিরাগের। কিন্তু সেই পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় নীতিশ কুমার।
জেডিইউ সাংসদ লালন কুমার এবং এক বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ উপস্থিত হন পশুপতির কাছে। সেখানে পশুপতি জানায় চিরাগের হাতে ব্যাটন না থাকলে বিহার এবং কেন্দ্রের এনডিএ শিবিরে শামিল হতে পারেন তাঁরা। শনিবার চিরাগের এক আত্মীয়ের সমর্থনে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷
সূত্রের খবর, যদি পশুপতির নেতৃত্বে এলজেপি এনডিএ শিবিরে প্রবেশ করে সেক্ষেত্রে তাঁর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই কাকা-ভাইপোর ঝগড়ায় আলাদা মোড় নিতে চলেছে পড়শি রাজ্যের রাজনীতি৷