সত্যিকে প্রমাণ করতে পারে একমাত্র সময় ও ধৈর্য
আমরা সকলেই জানি যে, নদীর এক কূল যখন ভাঙে অন্য কূল তখন গড়ে। যুগযুগ ধরে প্রকৃতির নিয়মে এই ভাঙাগড়ার খেলাই চলছে।
পার্থ প্রতীম বিশ্বাস
‘নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস’ – কবিগুরু সেই কবেই এই কথাগুলো বলেছিলেন এবং আজও তা চরম সত্য।
আমরা সকলেই জানি যে, নদীর এক কূল যখন ভাঙে অন্য কূল তখন গড়ে। যুগযুগ ধরে প্রকৃতির নিয়মে এই ভাঙাগড়ার খেলাই চলছে।
একদা কলকাতার কালীঘাট মন্দিরের পাশ দিয়ে চলা গঙ্গা আজ ‘আদি গঙ্গা’ নাম নিয়ে এক চওড়া এবং মজা নর্দমায় রূপান্তরিত।
মধ্যমগ্রাম সীমানায় একদা যা ছিলো লাবণ্যবতী নদী আজ সেটাই নোয়াই খাল। কলেজ জীবনের অনেক দুরন্ত প্রেমিক প্রেমিকা আজ অন্যের সঙ্গে ঘরকন্নায় ব্যস্ত।
একদা কংগ্রেস দলের ছাত্র সংগঠনের নেত্রী কংগ্রেস দলের সহযোগিতায় ক্ষমতায় বসেই বলেন, ‘একসময় কংগ্রেস করতাম এটা ভাবলে ঘৃণা হয়।’ নানান দলের ভাঙা টুকরো জুড়ে আজ তিনি অন্য দলের প্রধান।
একইভাবে দেশে অন্যান্য প্রান্তেও নানা অসুখী মানুষ তথা নেতার নাম শোনা যায়।
যারা একটি দলের আশীর্বাদ ও সমর্থনে বড় হন, প্রচার পান, ক্ষমতায় বসেন। তারপর একদিন আরও ক্ষমতার লোভে দলবদল করেন।
আমরা জানি, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। সবার কপালে সবসময় শিকে ছেঁড়ে না। সকলের ‘সময়’ কিন্তু সবসময় সমান যায়না। আর আমরা কেউই সময়ের উর্ধ্বে নই।
তাই লোভে পড়ে আজ যা রঙিন বলে মনে হচ্ছে একদিন সেটাই সাদাকালো হয়ে যাবে। সেদিন কাকে দোষারোপ করবেন?
কবিগুরুর বলা কথার প্রথম লাইনটা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। এবারে শেষ লাইনটা, ‘নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।’
এই মুহুর্তে নদী যে পারটা গড়ছে, পরের মুহুর্তে সে অন্য পারটাও গড়বে। একমাত্র সময় এবং ধৈর্যই পারে সত্যিকে প্রমাণ করতে, বাস্তবকে সামনে আনতে। আসুন, সততার সঙ্গে অপেক্ষায় থাকি।