রাম মন্দির নির্মাণের দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল “শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র” ট্রাস্টের ওপর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলে আসা অয্যোধ্যার রাম জন্মভূমি মামলার রায় গত বছরের ৯ নভেম্বর ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। তিন মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার লোকসভার অধিবেশনের শুরুতেই সেই ট্রাস্ট বোর্ডের নাম ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। “শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র” নামের এই ট্রাস্ট মন্দির নির্মাণের কাজে নিযুক্ত থাকবে বলে জানালেন তিনি।

অয্যোধ্যার রাম জন্মভূমি গঠনের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয় গত তিন মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে। এবিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে মিলিতভাবে এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দেয় আদালত। বুধবার লোকসভার অধিবেশনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, রাম মন্দির নিয়ে ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকেই “শ্রীরাম জন্মভূমি তির্থক্ষেত্র” এর নাম ঘোষণা করা হয়। যারা মন্দির নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করবে। প্রায় ৬৭.০৭৩ একর জমির ওপরেই গঠিত হবে রামমন্দির।  এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী অয্যোধ্যার ভিতরেই যে পাঁচ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই জমি দেওয়া হবে। এমনটাই এদিন লোকসভায় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত বছরের ৯ নভেম্বর অয্যোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে মামলার রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বলা হয়, স্থাপত্যের ভিতর এবং বাইরের কিছু অংশ থেকে প্রমাণিত হয় এখানেই ভগবানের রামের অস্তিত্ব রয়েছে। পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায় ঘোষণার পর থেকেই নতুন করে জল্পনা শুরু হয়। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে খুশি হননি অনেকেই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করেন অনেকেই। শুধুমাত্র আর্কিওলজিকাল সার্ভে রিপোর্ট দেখে সুপ্রিম কোর্ট রায় কিভাবে ঘোষণা করল? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন অনেকেই। শুধুমাত্র বিশ্বাসের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করেন এআইএমআইএমের সভাপতি আসাদ্দুদিন ওয়েইসি।

২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাম মন্দির ইস্যুকে কেন্দ্রও করে বহু প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। নির্বাচনী ইস্তেহারে যে রামমন্দিরের কথা বিজেপি ঘোষণা করেছে, তা পূরণ হবে কি না এ নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে এনডিএ শিবিরের কিছু শরিক দল। এরপর ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় বিজেপির কোর্টে বল ঠেলে দেয়।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে মোদি সরকারের বিরোধিতায় সরব হয়েছে তাঁদেরই এক সময়ের শরিক দলগুলি। মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে একাধিক এনডিএ শরিকদের হারিয়েছে মোদি-শাহের দল। যার ফলে একাধিক রাজ্য ইতিমধ্যেই হাতছাড়া করতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। দিল্লি নির্বাচনের পরেই বাংলা, বিহার, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন। এখন রামমন্দির ইস্যুতে কি তাঁদেরকে এনডিএ শিবিরে ফিরে পাবে বিজেপি? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

সম্পর্কিত পোস্ট