ছাগল দিয়ে লাঙল চাষ হয় না, থালা বাজাও মোমবাতি জ্বালাও
পার্থ প্রতীম বিশ্বাস
রাজ্য সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি
আবারও সেই ২০১২ সাল থেকে দেশ জুড়ে শুরু হওয়া মোদী মোদী আর গুজরাট মডেলের গল্পে ফিরে যাই।
একদিকে দীর্ঘ সময় ধরে দেশবাসীর শিক্ষা, খাদ্য ও স্থায়ী রোজগারের দাবি মেনে একের পর এক সেইসব দাবিগুলোকে সাংবিধানিক অধিকারে রূপান্তরিত করছেন ডঃ মনমোহন সিং সরকার। আগেই আইন করে মেনে নিয়েছেন দেশবাসীর সরকারী তথ্য জানার অধিকার।
সারা বিশ্ব ভারতবর্ষকে নতুন নেতা হিসাবে মেনে নিতে শুরু করেছে। প্রধান ও ক্ষমতাশালী দেশগুলো ভারতবর্ষের বাজার ধরতে লড়াইয়ে নেমেছে।
আর এদিকে দেশের ভেতরে কিছু বেওসায়ী তাদের ধান্দার স্বার্থে টাকা খরচ করে তৈরী করেছে হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকে নিয়মিত প্রচার হচ্ছে নানান কুৎসা ও রটনা।
এসবের মূল উদ্দেশ্য একটা, দেশের মাথায় একটা জোকার চাই। এমন একটা জোকার, যে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু ওইসব বেওসায়ীদের স্বার্থে কাজ করবে আর জনগণকে ধোঁকা দিতে আজগুবি গল্প ছড়াবে।
আরও পড়ুনঃ সাঁইবাড়ি হত্যাকান্ডের ৫০ বছর, বিচার মেলেনি শুধু দগদগে ঘা হয়ে আছে
শেষ পর্যন্ত পরাজয় হলো শিক্ষার, পরাজয় হলো সত্যের। দেশে ক্ষমতা বদল হলো। অজস্র মিথ্যা আর কথার ফুলঝুরি সাজিয়ে ক্ষমতায় এলেন এমন একজন লোক, যার শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজ আজও পাওয়া গেল না। পাওয়া গেল না তার গুজরাট মডেলের রূপরেখা, এমনকি তার বিবাহিত স্ত্রীও পেলেন না ন্যূনতম মর্যাদা।
দেশ জুড়ে এক শ্রেণির অন্ধকারের সন্তান তাদের লুকানো বিষদাঁত নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। ধর্ম জাত আঞ্চলিকতার নামে ছড়ানো শুরু হলো সেই বিষ। একদিকে শুরু হলো ধ্বংসলীলা, আর অন্যদিকে দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতার মস্তি করা।
সেই সঙ্গে প্রতিবাদীদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে কোনঠাসা করা। এবং এসবের পরেও যখন এই সরকারের মাথারা বুঝলেন, তাদের চালাকি ধরা পড়ে গিয়েছে তখন তারা ছুড়লেন সেই ব্রহ্মাস্ত্র অর্থাৎ যুদ্ধ। সরকারের অপদার্থতায় এক নকল যুদ্ধে প্রাণ হারালো দেশের বহু আধাসেনা। আর সেই সেনাদের প্রাণের বিনিময়ে আবারও ক্ষমতা ফিরে পেলো ক্ষমতাসীনরা।
কথায় আছে ছাগল দিয়ে লাঙল চাষ হয় না। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই একের পর এক অপকর্ম করে সরকার ও তার ঘোলাটে মস্তিষ্করা নিজেদের সেই পরিচয়ের বার্তা দিচ্ছিলেন। দেশের অর্থনীতি যখন ক্রমশ নিচে আরও নিচে নেমে যাচ্ছে, তখন সম্রাট নিরোর এই নবরূপ দেশবাসীকে ‘ফাইভ ট্রিলিয়ন’ এর মিথ্যা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। অর্থনীতির পন্ডিতরা বারবার সতর্ক করা স্বত্তেও এদের ঘুম ভাঙেনি।
আরও পড়ুনঃ #Coronavirusনিজামুদ্দিন ছাড়াও রয়েছে ১০টি হটস্পট
আর এসবের মধ্যেই ছুটে আসা করোনা ভাইরাস আরও বড় বিপদ তথা পরীক্ষায় বসিয়ে দিলো। এবং বোঝা গেল, মহারাজ প্রকৃত অর্থেই অশিক্ষিত। তাই একের পর এক অবৈজ্ঞানিক বার্তা আসছে তার তরফ থেকে। কিন্তু তাতে মহারাজের কোনও হেলদোল নেই।
আসলে মহারাজ হয়তো শুনতে পাচ্ছেন তার মৃত্যু ঘন্টার ধ্বনি। হয়তো সে জন্যই শেয়ালের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মাঝেমাঝেই হুক্কাহুয়া ডাক ছাড়ছেন। দেখে নিতে চাইছেন তার সেই ডাক অনুসরণ করে আরও কতগুলো শেয়াল একই সুরে তাল মেলায়? থালা বাজায়। মোমবাতি জ্বালায়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই বক্তব্যে একান্তই লেখকের ব্যক্তিগত। এর জন্য কোনোভাবেই #TheQuiry দায়ী না।