বিধানসভায় নীরব, রাজভবনে সরব, মনোজের ভূমিকায় উঠছে প্রশ্ন

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আজ বিধানসভায় পেশ করা হল তৃণমূল সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এক কথায ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা রাজনৈতিক মহল।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এই বাজেট নতুনকরে জঙ্গলমহল ও উত্তরবঙ্গে খাতা খুলতে সাহায্য করবে। একদিকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট, করছাড় থেকে বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসাথী প্রকল্প। অন্যদিকে বন্ধু থেকে বঙ্গশ্রী এবং সর্বপরি চা সুন্দরী থেকে হাসির আলো।

একের পর এক নতুন প্রকল্প জনগণকে নতুন করে আশার আলো দেখাবে তা এককথায় স্পষ্ট।

তবে এই বাজেটে নতুন কোনো দিশা নেই। লোকদেখানো এবং সম্পূর্ণ ভোটমুখী। এক কথায় প্রতারণার বাজেট। ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটকে এভাবেই কটাক্ষ করল বাম-কংগ্রেস।

আরও পড়ুনঃসন্ত্রাসে ইন্ধন জোগানো তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারের দাবিতে কোচবিহারে পথ অবরোধ বিজেপির

বাজেট শেষের পরই সাংবাদিক সম্মেলন করেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান।

বাম-কংগ্রেস এই নিয়ে সরব হলেও বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে একদম শান্তভাবেই দেখা গেল শাসকদলের অন্যতম বিরোধী দল বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গাকে।

বরং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে বিজেপির একটি দল রাজ্যপালের কাছে গেলেন অভিযোগ জানাতে। এখানেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক দলের একাংশ। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট পেশের পর কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল।

সরাসরি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, কেন্দ্রের বাজেটে পেশের পর দেশেরব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে ভেন্টিলেশনের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। সেখানে রাজ্যের বাজেট পেশের পর কার্যত নিরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা গেল বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গাকে।

একদিকে যখন লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিরোধীদের একের পর এক কড়া জবাব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, তখন রাজ্য বাজেট পেশের পর মনোজ টিগ্গার বিরোধীতা গেরুয়া শিবিরকে নতুন করে মাইলেজ দিত। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

১৯এ হাফ ২১এ সাফ স্লোগানকে সামনে রেখে বিজেপির অপারেশন বাংলাকে কার্যত প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিলেন মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক ওরফে বিধানসভায় পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা।

চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা  মাদারিহাট। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে একাধিক সমস্যায় ভুগছেন চা শ্রমিকরা। বন্ধ রয়েছে একাধিক চা বাগান। সেখানে রাজ্যবাজেটে চা সুন্দরী প্রকল্প ও চা বাগানগুলির কর ছাড়ের কথা ঘোষণা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েই পেশায় শিক্ষক মনোজের ভূমিকা কার্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল দলকে।

সর্বদা বিধানসভায় বিরোধী হিসাবে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ছিল ক্ষুরধার। দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসনে মনোজের ভূমিকা কার্যত বেমানান বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ আজ পর্যন্ত বিধানসভায় জোড় গলায় বিরোধীতার সুর মনে করতে পারছেন না কেউই।

রাজনৈতিক দক্ষতার অভাব? নাকি অন্য কোনো ইঙ্গিত? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিরোধী শিবিরে। কারণ বিধানসভা পরিসরে বিরোধীদের কন্ঠস্বরই প্রমাণ করে দেয় অনেক কিছু।

আগামী বছর যে রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে সেই দলের সৈনিক হিসাবে মনোজের বিরোধিতা বাংলার বুকে পদ্মের মাটি অনেকটাই শক্ত করতে পারত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল

সম্পর্কিত পোস্ট