আদর্শ ভেসে গিয়েছে গঙ্গার জলে, রাজনীতি এখন শুধুই ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার বিষয়!

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনীতিক মানে আদর্শবাদী সমাজ সচেতন মানুষ, এমনই ধারণা ছিল একসময়। এমনকি কোন‌ও আদর্শকে ভয়ঙ্কর মনে হলেও তার অনুসারীদের সংশ্লিষ্ট আদর্শের প্রতি আস্থাশীল থাকার জন্য একটু অন্য চোখে দেখা হতো। মনে করা হতো আর যাইহোক এর তো নির্দিষ্ট একটি অবস্থান আছে।

কিন্তু এসব আসলে অতীতের কথা। অতীত মূল্যবোধের কিছুই বর্তমানে বোধহয় অবশিষ্ট নেই। আজ যদি বলা হয় রাজনীতিবিদরা আদর্শবাদী হন, তবে বর্তমান প্রজন্ম ভেবে বসতে পারে হয়তো কোনও প্রাগৈতিহাসিক যুগের ধারণার কথা বলা হচ্ছে!

কেউ যদি নির্দিষ্ট আদর্শের অনুসারী হয় তবে নির্বাচনে হেরে গেলে, এমনকি তার দল ক্ষমতায় না থাকলেও সে সহজে পক্ষ বদলাতে পারে না। ধরুন, দীর্ঘদিনের কংগ্রেস ঘরানার নেতা যদি হঠাৎ করে সিপিএমে যোগ দেয় তবে বুঝতে হবে সেখানে আদর্শচ্যুতি ঘটেছে। বা আদর্শ বলে কিছুই নেই।

আবার কংগ্রেস করা একজন যদি দীর্ঘ ভাবনাচিন্তার পর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয় তবে আদর্শচ্যুতির বিষয়টি বলা যাবে না। কারণ দুটোই মধ্যপন্থি জাতীয়তাবাদী দল। তবে কংগ্রেসের প্রতি তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

প্রায়শ্চিত্ত না করেই কেন দায়িত্ব অর্জুনকে, প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলেই

কিন্তু রাজনীতিতে আদর্শ আজ আর অবশিষ্ট নেই বলেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূল এবং তৃণমূল থেকে বিজেপিতে হরবখত যাতায়াত চলছে। পুরোটাই হল টাকা কামানোর ধান্দা। এমনকি কমিউনিস্ট দল থেকেও মানুষ অবলীলায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে!

রাজনীতির নামে টাকা কামানোর এই কারবার চালাতে গিয়ে একাধিক অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে বাংলায়। আশ্চর্যজনক বিষয় হল, একেবারে ক্যাবিনেটের সদস্য থেকে শুরু করে নিচুতলা পর্যন্ত, বাংলার শাসক দলের অসংখ্য নেতারা আদর্শ বিহীনভাবে শুধুই লাভ-ক্ষতির হিসেব দেখে রাজনীতি করছেন।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই আদর্শহীন রাজনীতির বিষয়টি কমবেশি সব দলকেই ভোগাতে শুরু করেছে। তবে ক্ষমতায় থাকার দরুন তৃণমূল কংগ্রেসে এ ঘটনা সবচেয়ে বেশি। ফলে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বের কপালে। বিরোধীদের অবস্থাও একই রকম তথৈবচ। একদলের টিকিটে ভোটে জিতেও পদ না ছেড়ে অন্য দলে চলে যাওয়ার প্রবণতা যত বাড়ছে ততই রাজনীতি আদর্শহীন হয়ে পড়ছে। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

সম্পর্কিত পোস্ট