ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের নিয়ে রাজ্যের ভূমিকা সদর্থক মনে করছেন মনোবিদরা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দেশের বিদেশনীতি নিয়ে রাজ্য সরকারগুলোর প্রায় কিছুই করার নেই। সংবিধান তাদের সেই ক্ষমতা দেয়নি। তবুও এই সীমাবদ্ধতা নিয়েই মমতা সরকার ইউক্রেনে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে যাওয়া পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে।
এতে সরকারের লাভ কিছু হল কিনা তা তর্কসাপেক্ষ। তবে কঠিন পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করে বাড়ি ফিরে আসা পড়ুয়ারা বা তাদের পরিবার এতে কিছুটা হলেও মানসিক জোর পেল। ইউক্রেনে রুশ সেনা আক্রমণ করতেই ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন করেন আটক ভারতীয় পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনার জন্য। এই সময় ভারত সরকারের চূড়ান্ত অবস্থান নির্ধারণে দেরি হওয়ার সমালোচনাও করেছিলেন মমতা।শেষ পর্যন্ত মোদি সরকার ‘অপারেশন গঙ্গা’ শুরু করে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে আটক ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়।
যত কাণ্ড উত্তরে, ‘শূন্য’ সিপিএমের জেলা সম্মেলনে প্রবল উত্তেজনা, তৈরি হল নজিরবিহীন ইতিহাস
দেখা যায় এ রাজ্যের করিমপুর থেকে কাকদ্বীপ, জঙ্গলমহল থেকে উত্তরবঙ্গ বিভিন্ন এলাকার ছেলে-মেয়ে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিল। নিজের সীমিত ক্ষমতাতেই প্রতিটি পড়ুয়াকে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে রাজ্য প্রশাসন। গোটাটাই হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।
এই পড়ুয়ারা প্রায় প্রত্যেকেই মৃত্যু প্রত্যক্ষ করে ইউক্রেন থেকে ফিরে এসেছে। তারা চোখের সামনে মুহুর্মুহু গুলি চলতে, মিসাইলের আঘাতে একের পর এক ইমারত ভেঙে পড়তে দেখেছে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মানুষের অবস্থা ঠিক জায়গায় নেই। বিধ্বস্ত হয়েই তারা পড়াশোনা মুলতবি রেখে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে।
এই অবস্থায় পড়ুয়াদের রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর ফলে ওই পড়ুয়ারা বুঝবে তাদের পাশে সরকার আছে। শত মানসিক যন্ত্রণা সত্ত্বেও তারা মনে কিছুটা আশার আলো দেখতে পাবে। যেটা এই পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এই মুহূর্তে খুব জরুরি বলে জানিয়েছেন মনোবিদরা।
শুধু তো ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা নয়, সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিভাবকরাও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নানানভাবে পাশে এসে দাঁড়ানোয় অভিভাবকরাও কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন। বুঝতে পারছেন, পরিস্থিতি কঠিন হলেও তাঁরা একা নেই। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার বিকল্প কিছু একটা পথ বার করবে সন্তানদের জন্য।