দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিচ্ছে পাঞ্জাবঃ মনোহর লাল খট্টর
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজধানীতে বেড়ে চলেছে কৃষক আন্দোলনের পরিসর। উপস্থিত হয়েছেন পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা। গত কয়েকদিন ধরে চলা কয়েক হাজার কৃষকের আন্দোলনের জন্য পাঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের দিকে আঙুল তুললেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। অভিযোগ, গোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের অফিস। পাশাপাশি পাঞ্জাব থেকে আসা কৃষকদের লাঠিচার্জ এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে দেওয়ার জন্য হরিয়ানার পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হরিয়ানা নয়, শুধুমাত্র পাঞ্জাবের কৃষকরা আন্দোলন করছেন। হরিয়ানার কৃষকরা এর থেকে দূরে রয়েছেন। এর জন্য হরিয়ানার কৃষকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে চলা দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনের জন্য বৃহস্পতিবার টুইটারে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ায়র জন্য হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের কাছে আর্জি জানান ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং।
সংসদে পাশ হওয়া তিন কৃষি আইনের বিরোধিতায় দিল্লি যাওয়ার ডাক দেন বিভিন্ন কৃষক সংগঠনগুলি। কিন্তু দিল্লি বর্ডারে তাঁদের আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে হরিয়ানার পুলিশ। আন্দোলন রুখতে সিমেন্টের ব্যারিকেড, কাটাতার ব্যবহার করতে হয় পুলিশকে। কোথাও বালি ভর্তি ট্রাক রাস্তার ওপর রেখে অথবা পাকা রাস্তায় গর্ত খুঁড়ে আন্দোলনকারীদের পথ আটকানো হয়। কৃষকদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ব্যবহার করে জল কামান এবং কাঁদানে গ্যাসও।
আরও পড়ুনঃ একাধিক পন্থায় দিল্লি বর্ডারে কৃষক আন্দোলনকে প্রতিহতের চেষ্টা
শনিবারেও একই ছবি রাজধানীতে। দিল্লির বাইরে আন্দোলনের জন্য কৃষকদের জায়গা ঠিক করে দেওয়া হলেও দিল্লি বর্ডার পার করতে দেওয়া হচ্ছে না। দিল্লির বুবারি মাঠে আন্দোলনের জন্য জায়গা স্থির করে দেওয়া হয়েছে কৃষকদের জন্য। তবুও দিল্লি প্রবেশের আগে তিনটি জায়গায় কৃষকদের আটকানো হয়েছে।
কৃষকদের কথায় আগামী ছয় মাসের খাবার মজুত করে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। যতক্ষণ অবধি নয়া কৃষি আইন সরকার প্রত্যাহার করে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। বুবারি মাঠে আন্দোলনকারী কৃষকরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ অবধি এই কালো আইন সরকারের তরফে তুলে না নেওয়া হয়, ততক্ষণ অবধি তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বুয়ারি ময়দানে আন্দোলনকারী কৃষকদের জন্য সমস্ত কিছু ব্যবস্থা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আম আদমি পার্টির দুই সদস্য এবং মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন এবং রাঘব চাড্ডার ওপর দায়িত্ব সঁপেছেন তিনি।
গতকাল আন্দোলনকারী কৃষকদের আটকের জন্য দিল্লি সরকারের কাছে নয়টি স্টেডিয়ামের অনুমোদন চায় দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তাতে রাজি হননি কেজরিওয়াল।
অন্যদিকে, কৃষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার আর্জি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। যে কোনও রকম আলোচনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি বলে জানিয়েছেন তিনি। শীত এবং কোভিডের কথা মাথায় রেখে আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য কৃষকদের আর্জি জানান মন্ত্রী। আগামী ৩ ডিসেম্বর বৈঠকের জন্য কৃষক সংগঠনগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।