Suchpur Massacre :সূচপুরের মতো মামলা সাজাতে বলে মমতা-অনুব্রত জ্যোতির পুলিশকে সার্টিফিকেট দিলেন !

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলের পথ চলা শুরুর পর ২০০০ সালের সূচপুর গণহত্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে প্রথম কোন‌ও বড় ইস্যু এনে দিয়েছিল। নানুরের এই গ্রামে গিয়ে ব্যাপক আন্দোলন এবং নিহত ১১ জনের মধ্যে ১০ জনের‌ই পরিবারের একজন করে সদস্যকে রেলে চাকরি দিয়ে সেই সময় যথেষ্ট সহানুভূতি কুড়িয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এই সহানুভূতির হওয়ায় ভর করেই ২০০১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সত্যি হয়নি, সেটা অন্য বিষয়।

 

India-Bangladesh train service :ভারত-বাংলাদেশে নতুন বন্ধুত্ব,৫৬ বছর পর শুরু রেল পরিষেবা

তবে বগটুইয়ে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে অনুব্রতর সূচপুরকে টেনে আনা ও সেই কথা শুনে মমতার কেস সাজানোর নির্দেশ দেওয়াকে ঘিরে ফের লাইম লাইটে উঠে এসেছে সূচপুর। এখানেই প্রশ্ন, বাম সরকার দলীয় রং না দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিয়েছিল সূচপুরে। বগটুই গণহত্যায় শাসকদল হিসেবে তৃণমূল সেই ভূমিকা পালন করতে পারবে কি?

সূচপুরে ১০ জন মতান্তরে ১১ জনকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় তৎকালীন বাম সরকারের পুলিশ যেভাবে মামলা সাজিয়েছিল তাতে অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই শাস্তি পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নানুরের তৎকালীন দাপুটে সিপিএম নেতা নিত্যণারায়ন চট্টোপাধ্যায়।

যদিও তৃণমূল আমলেই কলকাতা হাইকোর্ট শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেককেই বেকসুর খালাস করে দেয়। আদালতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন গ্রাম্য বিবাদে ১১ জনের মৃত্যু হলেও অস্বাভাবিকভাবে ৪৪ জনকে দায়ী করা হয়েছিল। তাঁর সেই যুক্তি মোটামুটি মেনে নিয়ে অভিযুক্তদের অনেককেই রেহাই দেয় হাইকোর্ট।

সূচপুরে মৃতরা ক্ষেতমজুর নাকি ডাকাত ছিল তা নিয়ে বিতর্কের নিষ্পত্তি আজও হয়নি। তবে তাদেরকে যে নির্মমভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল সেটা সত্যি। সূচপুরের ২২ বছর পর রামপুরহাটের বগটুইয়ে তৃণমূলের উপপ্রধান খুনের পর জীবন্ত জ্বালিয়ে যেভাবে ৮ জনকে মতান্তরে ১০ জনকে খুন করা হয়েছে তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল যে মন্তব্য করেছেন তা ঘিরে নতুন কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে।

এতদিন তৃণমূল সূচপুর গণহত্যার জন্য একতরফাভাবে প্রাক্তন শাসকদল সিপিএমকে দায়ী করত। অথচ তৎকালীন বাম সরকার যে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছিল তা তারা কোথাও স্বীকার করে না। এদিকে বগটুইয়ে দাঁড়িয়ে অনুব্রত ও মমতার কথা থেকে স্পষ্ট সূচপুর গণহত্যার শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জ্যোতি বসু সরকারের দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের কথা তাঁরা একপ্রকার মেনে নিচ্ছে তৃণমূল।

কিন্তু এখানেও একটা প্রশ্ন, অনুব্রত মণ্ডল সাংসদ বিধায়ক তো দূর, সামান্য একজন কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত সদস্য‌ও নন। তিনি সরকার বা প্রশাসনের কেউ না হয়েও কী করে পুলিশকে মামলা সাজানোর বিষয়ে নির্দেশ দেন? তবে কি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথাই ঠিক, বীরভূম জেলায় অনুব্রতর নির্দেশে কাজ করে পুলিশ?

গণহত্যার ক্ষতে মলম লাগাতে গিয়ে তা আরও দগদগে করে ফেলেছেন অনুব্রত। তাঁর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট