সুপ্রিম স্বস্তি পাইলটের, হাইকোর্টের রায়ের দিকে চেয়ে গেহলোট

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ স্পিকার সিপি জোশির আনা দলবিরোধী কাজের অভিযোগের পর রাজস্থান হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেন শচীন পাইলট এবং তার ১৮ জন সঙ্গী।

শুক্রবার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারিত করে রাজস্থান হাইকোর্ট। মামলা চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন স্পিকার সিপি জোশি।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার আগে কোনওভাবেই এই মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। যদিও স্পিকার সিপি জোশির তরফে জানানো হয়, বিধানসভার সাংবিধানিক বিষয়ের মধ্যে আদালতের হস্তক্ষেপের কোনও প্রশ্ন ওঠে না।

সাংবিধানিকভাবে কোনওমতেই গণতন্ত্রের ভিন্নমতকে আটকানো সম্ভব নয়। সাফ জানিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের ঘটনা উল্লেখ না করেই বিচারপতি একে মিশ্র বলেন, মনে করুন কোনও নেতার ওপর মানুষ আস্থা হারিয়েছে। কিন্তু দলে থাকলে তাকে কখনওই বরখাস্ত করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে গণতন্ত্রে ভিন্নমতকে আটকানো হবে।

এদিন স্পিকার জোশীর হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল জবাব করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বাল। যখন গোটা বিষয়টি স্পিকার দেখছেন তখন হাইকোর্টের এবিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনও প্রশ্ন ওঠে না। এমনকি এবিষয়ে আদালত কোনওভাবেই অন্য দলকে সমর্থন করতে পারে না। এই ব্যাপারে শুধুমাত্র স্পিকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কোনও আদালত নয়।

তখনই বিচারপতি মিশ্র প্রশ্ন করেন , মানুষের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তারা। ভিন্নমত পোষণে তাদের কোনও অধিকার নেই?

গোটা বিষিয়টি হাইকোর্টের ওপর ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২৭ তারিখ নির্ধারিত করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিআর গাভাই এবং কৃষ্ণ মুরারীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলার সওয়াল জবাব শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজস্থান হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়, করোনা বিপর্যয়ের মাঝে শচীন পাইলট এবং ১৮ বিধায়ককে নোটিশ পাঠিয়ে উত্তরের জন্য স্পিকার সিপি জোশি যে সময় চেয়েছেম তা অত্যন্ত কম।

এরপরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন স্পিকার। পাল্টা কেভিড জমা দিয়ে শচীন পাইলট জানান, সুপ্রিম কোর্ট কোনও রায় ঘোষণার আগে যেন তার কথা শোনা হয়।

বিদ্রোহী বিধায়কদের তরফে জানানো হয়, কংগ্রেস ছাড়তে তারা রাজি নন। বরং শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান তারা।

পাল্টা কপিল সিব্বাল বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যতবার দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে, প্রত্যেকবারেই তারা অনুপস্থিত ছিলেন। এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তারা দলে থাকতে চান কিনা।

বন্যা নয়, নদী বাঁধ ভাঙন হল অসমের বড় শত্রু দাবী প্রাক্তন মুখ্যসচিবের

১৯ জন বিধায়কের সমর্থনে যদি রাজস্থান আদালত রায় দেয়, সেক্ষেত্রে বিপদ হতে পারে কংগ্রেসের। এই আশঙ্কাতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন স্পিকার সিপি জোশি। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এমনিতেই ১৯ বিধায়কের সমর্থন না থাকায় সংখ্যা মেলাতে গিয়ে বারবার বিপদে পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোটকে। যদি তাদের বিধায়ক পদ থেকে বরখাস্ত না করা হয়, সেক্ষেত্রে বিপদ মাথার ওপর গিয়ে দাঁড়াবে।

এর আগে অডিও টেপে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শিখাওয়াতের নাম জড়ায়। এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী গেহলোট। রাজস্থানের দলবদলের রাজনীতির কথা প্রধানমন্ত্রীর অজানা কিনা সেই বিষয়ে চিঠিতে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এই মুহুর্তে আমাদের সকলের উচিত একজোট হয় মারণ রোগের মোকাবিলা করা। কিন্তু তা না করে সরকার ভাঙার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।

এর আগে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটের ওপর সরকার ভাঙার অভিযোগ এনেছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক গিরিরাজ সিং মালিঙ্গা। অভিযোগ, ৩৫ কোটি টাকার বিনিময়ে দলবদলের অফার দিয়েছিলেন শচীন।

পাল্টা শচীন জানান, তার ইমেজকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। মিথ্যা অভিযোগ আনার জন্য বিধায়ক মালিঙ্গাকে নোটিশ পাঠিয়েছেন শচীন। সেখানে বিধায়ককে ক্ষমা চাইতে বলেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী।

সব মিলিয়ে মরুপ্রদেশের রাজনৈতিক ঝড় কি আদালতে সমাপ্ত হবে? নাকি নতুন কোনও ঝড়ে আবার কোনও নতুন কাহিনী সামনে আসবে? জাতীয় রাজনীতিতে কতটা বদল আনবে রাজস্থান? তাকিয়ে গোটা দেশ

সম্পর্কিত পোস্ট