সুরে বাজলেন শতাব্দী, ‘বেসুরো’ রাজীবকে নিয়ে নাভিশ্বাস তৃণমূলের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলের অন্তরে এখন চাপা গুঞ্জন চলছে আর একটু পরেই শুরু হবে রাজীব ব্যানার্জির ফেসবুক লাইভ। কী বার্তা দেবেন তিনি? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন গোটা রাজ্যের মানুষ।
রাজনৈতিক মহলের মতে হয়তো আজকেই ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে স্পষ্ট করে দিতে পারেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর যদি তা না হয় তাহলে ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো বার্তা হয়তো তিনি দেবেন রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে।
বেশ কিছুদিন যাবৎ দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন রাজ্যের দাপুটে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দল তাকে বেসুরো তকমা দিয়েছিল। বেসুরো রাজীবকে সুরে আনতে বহু চেষ্টা করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে তাতে বরফ গলেনি বলেই রাজীব ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বেসুরো পথে হাঁটতে আরম্ভ করেছিলেন বীরভূমের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায়। তড়িঘড়ি মানভঞ্জন নেমে পড়ে তৃণমূল। স্বয়ং কুনাল ঘোষ হাজির হন শতাব্দী রায়ের বাড়িতে। ফোনে কথা বলেন সৌগত রায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন।
শুক্রবার রাতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শতাব্দী। তাতেই দিল্লিগামী শতাব্দী এক্সপ্রেসের গতিরোধ করা গেলেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় গতি রুখতে সক্ষম হল কিনা দল সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
শুক্রবার রাতে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার সকালেই তার ভূয়শী প্রশংসা করে শতাব্দী রায় ফেসবুক ফ্যান পেজে পোস্ট করেন। একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক বুদ্ধি ও দক্ষতা নিয়ে প্রশংসা করেন তিনি।
এমনকি ২০২১ এর নির্বাচনে কাঁধে কাঁধ রেখে লড়াই করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। আর তাতেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে তৃণমূল। আপাতত ভাবে এই তারকা সাংসদকে রুখে দেওয়া হলেও, আর যারা বেসুরো রয়েছেন তাদের কি সুরে ফেরাতে পারবেন শাসক শিবির এ প্রশ্নের উত্তর অধরা।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলেই থাকছেন শতাব্দী, বৈঠক শেষে জানালেন তারকা সাংসদ
তৃণমূলের অন্দরে শতাব্দী এপিসোডের যবনিকা পতন হলেও বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বিস্ফোরক দাবি করেছেন ।
সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই মন্দিরে দাঁড়িয়েই একদিন বলেছিলাম শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করবেন। আর তা সম্ভব হয়েছে। আজকে আবার বলছি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসূন ব্যানার্জি, অপরুপা পোদ্দার এবং শতাব্দী রায় সহ আরো অনেকেই খুব তাড়াতাড়ি বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। শুধু সময়ের অপেক্ষা। শুক্রবার নাটক করে তৃণমূল নেত্রী শতাব্দীকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি সফল হবেন না।”
বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খানের এই মন্তব্য প্রকাশের পরই জলঘোলা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আগামী দিনে কি হবে শাসক দলের ভবিষ্যৎ, তা চিন্তায় ফেলেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলকে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে দলবদলের পালা এইভাবে চলতে থাকলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভব।
প্রথমত, শুভেন্দু অধিকারীর মত জননেতা ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। সেই সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অনুগামীরা। এবার সেই পথেই যদি হাঁটেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায় তাহলে অচিরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে তৃণমূলী সাম্রাজ্য।
আর এর জন্য কেউ যদি থেকে থাকেন তাহলে সেটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত এবং সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে যারা অবস্থান করছেন তাদের অনেকেই।
আপাতত আর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হতে চলেছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক লাইভ। জনতার দরবারে এসে জনপ্রতিনিধি কি বার্তা দিলেন সেটাই দেখার।