রাজনৈতিক মতবিরোধ এড়িয়ে অরূপ রায়কে দেখতে গেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রবিবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি হন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। সোমবার দুপুরে তাঁকে দেখতে উপস্থিত হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তারপরেই অরূপ রায়কে দেখতে উপস্থিত হন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিবার সূত্রে খবর, ষাটোর্ধ্ব অরূপ রায়ের হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিস রয়েছে। তাই তাঁকে প্রতিনিয়তই সাবধানে থাকতে হয়। তবে সম্প্রতি প্রশাসনিক ও দলীয় কাজের বেশ চাপ রয়েছে তাঁর উপর। শনিবার সকাল থেকে অসুস্থ ছিলেন তিনি।
তবে সেই সময় তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ওইদিন বিকেলে হাওড়া তৃণমূল সদর কার্যালয়ে ছিলেন। ওইদিন বিকেলে হাওড়া তৃণমূল সদর কার্যালয়ে ছিলেন। সেই সময় হঠাত্ই বুকে ব্যথা অনুভব করেন। বাড়ি চলে যান।
রবিবার ভোর থেকে অসুস্থতা আরও বাড়ে। শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথা শুরু হয়। এরপরই তাঁকে কলকাতার উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাঁর। করা হয় অ্যাঞ্জিওগ্রাম এবং পরে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। সেখানেই ধরা পড়ে ৭৫ শতাংশ হার্ট ব্লক রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুনঃ খুব ছোট থেকে হাত পাকিয়েছে কিভাবে চিটিংবাজি করতে হয়, অভিষেককে কটাক্ষ শুভেন্দুর
এরপরই সমবায় মন্ত্রীর শরীরে স্টেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, স্টেন্ট বসানোর পর আপাতত স্থিতিশীল মন্ত্রী অরূপ রায়। তবে তাঁকে বেশ কয়েকদিন হাসপাতালেই চিকিত্সকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। অসুস্থ মন্ত্রীকে দেখতে সোমবার উডল্যান্ডসে যান রাজ্যপাল। ভালই রয়েছেন বলে জানান জগদীপ ধনকর ।
অরূপ রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়- হাওড়া সদর তৃণমূলের দুই প্রথম সারির নেতা। অথচ হাওড়ার রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যায় দুই নেতার মতবিরোধ, মনোমালিন্যের নানা বিষয়।
সম্প্রতি তা আরও প্রকট হয়ে উঠেছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক মন্তব্যে।নাম না করলেও রাজীব দুর্নীতি প্রসঙ্গে জেলাস্তরে নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তুলেছেন স্তাবকতার অভিযোগ। উঠে এসেছে ‘যত মম তত পথে’র কথাও। রাজীব নাম মুখে নেননি কারোর। তবে হাওড়ার তৃণমূলে ভাঙন রেখা স্পষ্ট হয়েছে দিনের পর দিন। লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফার পর ঠান্ডা লড়াই উষ্ণ হয়ে ওঠে আরও।
রাজীব যখন মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন অরূপ রায়ের এক্কেবারে নিস্পৃহ প্রতিক্রিয়া আরও বেশি করে নাড়িয়ে দেয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। অরূপকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “দল কত দিন ধরে করেছে? আমরা বহু আগে থেকে দল করছি। কেউ কেউ দলে নতুন যোগ দিয়ে, কাজ করার পরই যদি নানারকম বায়না, নালিশ করেন, তাহলে মুশকিল। যা হওয়ার তাই হয়েছে। এতে দলের কোনও ক্ষতি নেই। দল ঐক্যবদ্ধই রয়েছে।”
রাজীব অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই নিশ্চুপ ছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাওড়া জেলা তৃণমূল আড়াআড়িভাবে দুই শিবিরে বিভক্ত। রাজীব অনুগামীদের নানান বক্তব্য, দাবিদাওয়া পোস্টার-ব্যানারে সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে এসেছে। সে অর্থে অরূপ অনুগামীরাই নিস্পৃহ।
রাজীব ক্যাম্পে বৈশালী ডালমিয়া নিয়ে এখন সরগরম রাজনীতি। কিন্তু অসুস্থ অরূপকে দেখতে এসবের ঊর্ধ্বে রাজীব। অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে গেলেন হাসপাতালে। দেখা হল দুই সতীর্থের , হল সৌজন্য বিনিময়। তবে বিশেষজ্ঞদের কথায়, রাজনীতিকে এসবে না মেলালেই মঙ্গল!