রিল থেকে রিয়েল, স্মৃতিপটে স্মরণীয় মিলখা সিং
নয়ন রায়
পৃথিবীতে যারা সেরা তাদের চলে যাওয়ার পর অনেকটা শূন্যতা তৈরি হয়। যেমন মিলখা সিং। ৯১ বছর বয়সে করোনায় প্রয়াত হয়েছেন তিনি। সাধারন মানুষ হলে হয়তো উদ্দীপনা কম হত। কিন্তু যেকোনো মানুষের মৃত্যু দুঃখজনক। তাই মিলখা সিংহের চলে যাওয়া আসমুদ্রহিমাচলের কাছে বড় আঘাত।
ষাটের দশকে অলিম্পিক কাঁপানো সেই দৌড় আর কোনোদিন দেখেনি। মিলখাকে বাস্তবে দেখার অভিজ্ঞতা নেই। বিভিন্ন সংবাদপত্রের সাদাকালো ছবিতে আমরা সবাই দৌড়াতে দেখেছি তাঁকে বাজপাখির মতো। তিনি দেশ ও আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মানিত হয়েছেন বারবার।
তাইতো মিলখা সিংয়ের বায়োপিক দেখে ফরহান আখতারের অভিনয় মুগ্ধ করেছে দেশবাসীকে। সেই ঘটনা ভুলে যাওয়ার মতো নয়। ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ বায়োপিক। যা ধরা আছে তা দেখে আসমুদ্রহিমাচল মুগ্ধ হয়েছিল। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতায় ফারহান আখতার মুগ্ধ করেছিলেন দর্শকদের। ফারহান আখতারের সঙ্গে মিলখা সিং দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেছিলেন। সেই ছবি আজও আমাদের স্মৃতিপটে অস্পষ্ট হয়ে যায়নি।
মিলখা সিং চলে যাওয়া ভারতবর্ষের ক্রীড়া জগতের শূন্যতা তৈরী করল। মনে পড়ছে, বারবার সেই ড্রেসিংরুমে ব্লেজারটা হাত দিয়ে স্পর্শ করতে চাইছিলেন। সেই সময় তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে বলেন, “ব্লেজার কো হাত লাগায়। ইস ব্লেজার কা মতলব পাতা হ্যায়?” মুগ্ধ করেছিল ফারহানের অভিনয়।
প্রয়াত ভারতীয় দৌড়বীদ মিলখা সিং
দু’দেশের রাষ্ট্রনায়কদের উপস্থিতিতে যখন মিলখা তাঁর জীবনের সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন সেই দেশের এবং ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনায়করা জানিয়েছিল ‘তু তো শের হ্যায়’। স্বাভাবিকভাবে মিলখা সিং চলে যাওয়ায় ভারতবর্ষ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হলো তা ভাষায় অবর্ণনীয়। তাঁকে বলা হতো দুরন্ত বাজপাখি।
তার পরিবারের উপর অত্যাচারের কাহিনী আর মিলখার জীবনবোধ ও আর্থিক কষ্ট এবং প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে মিলখা সিং ভারতবর্ষের ক্রীড়া জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিল নিজের যোগ্যতায়।
তাই রিল লাইফের মিলখাকে দেখতে দেখতে তাঁর চলে যাওয়ার পর মন ভারাক্রান্ত হয়। মিলখা সিং মানে হাওয়ার মত দৌড়ানো। মিলখা মানে বাজপাখির মতো ঠোঁট নিচু করে চোখ উচু করে ছোঁ মেরে জয়ের স্বাদ অনুভব করেছিলেন। এই দেশের জন্য নিজের জীবনকে নিষ্পেষিত করে এনে দিয়েছিল আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মান।
তাই ৯১-এ চলে যাওয়া মিলখা সিং মানুষের হৃদয়ে থাকবেন আজীবন। তাই সবশেষে বলতেই হয় মিলখা সিং ‘তুম জাহা ভি হো দেশ তুমকো মিস জরুর কারেগা। কঠিন সংকট মে তুমহারা চলি জানা দেশকে লিয়ে বহত দুঃখ কী বাত। ফির ভি আপকো ইয়াদ করনা, হক বানতা হ্যয়।