বাধ সেধেছে বয়স, ৭ বছর ধরে অমিল বার্ধক্য ভাতা, হন্যে হয়ে ঘুরছে বৃদ্ধের পরিবার
বাসুদেব দাস, ঝাড়গ্রাম
গায়ের চামড়া হাড়ের বাঁধন ছেড়েছে। দৃষ্টি হারিয়েছে দুই চোখ। এমনকি বয়স কত, তাও ঠিক মত মনে পড়ছে না। ঝাড়গ্রাম জেলার নায়গ্রাম ব্লকের জামিরাপাল ৮-নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকরাপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা কেদার বেরার এখন এমনই অবস্থা।
সরকারি সাহায্যের আওতায় এসেও তা ভোগ করতে পারছেন না তিনি। অভিযোগ ২০১৩ সালে ব্যাঙ্কে গিয়ে শেষবারের মত বার্ধক্য ভাতা তুলেছিলেন তিনি। তারপর থেকে তিনি আর ব্যাঙ্কে যেতে পারেন না। তাই আর ভাতাও তুলতে পারেননি।
বয়সের কারনে হোক বা অন্যকোন কারনেই হোক, তিনি আধার নথিভুক্ত হতে পারেননি। যার ফলে কেদার বাবুর ছেলে হন্যে হয়ে ৭ বছর ধরে ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেও, বাবার বার্ধক্য ভাতার টাকা তোলার কোনও সুরাহা করতে পারেননি।
এমনকি পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর,কারোরই দৃষ্টিগোচর হয়নি এই ঘটনা।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্য শিশু ও মহিলাদের পুষ্টির বিকাশ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মুরগির বাচ্চা প্রদান সরকারের
কেদার বাবুর বড়ছেলে জানিয়েছেন আগে একবার পঞ্চায়েত সদস্যকে ও প্রধানকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। তার কথা বাবাকে ব্যাঙ্কে নিয়ে যাওয়াও প্রায় অসম্ভব। কোন সুরাহা না করেই বারবার ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে দিচ্ছে আমাদের।
বৃদ্ধার পুত্রবধূর কথায়, মাঠে কাজ করে সংসার চলে তাদের। সরকারি কোনও কাজও নেই। নেই কোনও সাহায্যও। যার ফলে দিন দিন কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে বৃদ্ধ শ্বশুরের চিকিৎসা ও পরিচর্যা।
এই ঘটনা নিয়ে জামিরাপাড়া ৮-নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে জানতে চাওয়া হলে গ্রামপঞ্চায়েত সচিব ক্ষিরোদ মাহাত বলেন, কাগজপত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, কেদার বেরার নামে প্রতি মাসেই বার্ধক্য ভাতা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-এ ঢুকছে। কিন্তু কেন তিনি টাকা তুলতে পারচ্ছেন না তা আমরা জানিনা। তাঁর ব্যাঙ্কের পাশবুক নিয়ে এলে আমরা দেখতে পারি।
অন্যদিকে উক্ত গ্রামের উপপ্রধান প্রভাত মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো। যাতে ওই ব্যাক্তি টাকা পেতে পারেন তার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।