বক্তব্য পর্যালোচনা করুন, প্রশান্ত ভূষণকে আরও দু’দিন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নিজের বক্তব্য নিয়ে ভাববার জন্য প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে আরও দু’দিন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায়দানের কথা ছিল।
এর আগেই ট্যুইট মামলায় শীর্ষ আদালত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে।বৃহস্পতিবার বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিআর গভাই ও কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চ প্রশান্ত ভূষণকে তাঁর বিবৃতি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দু’দিন সময় দেন৷
কিন্তু ভূষণ জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর বক্তব্যেই অনড় থাকছেন৷ বিতর্কিত সেই ট্যুইটে তিনি ক্ষমা চাইতে রাজি নন৷ ভূষণের আরও যুক্তি ছিল, আদালতের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করা তাঁর বাক স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যে পড়ে এবং এটা বিচারব্যবস্থাকে বাধা দেওয়ার জন্য আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে না।
এদিন প্রশান্ত ভূষণ জানিয়েছেন – আমার ট্যুইটের উদ্দেশ্য ছিল প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতিসাধন। আমি মনে করি আমার ট্যুইট আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে করেছিলাম। এই ট্যুইট নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা আমার কর্তব্য থেকে আমাকে বিরত করবে। আমি ক্ষমা প্রার্থনা করব না। আমি মহানুভবতার জন্যও আবেদন জানাব না। আদালত আমাকে যা শাস্তি দেবে আমি তা মাথা পেতে নেব।
এদিন নিজের বক্তব্যে অনড় থেকে তিনি আরও বলেন – মাননীয় বিচারপতি চাইলে আমি এটি পুনর্বিবেচনা করতে পারি কিন্তু তাতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবেনা। আমি মাননীয় বিচারপতির সময় নষ্ট করতে চাইনা। আমি আমার উকিলের সঙ্গে এই বিষয়ে পরামর্শ করব।
বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনও মানুষ নেই যার ভুল হয়না। আপনি বহু ভালো কাজ করতে পারেন। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তার জন্য আপনাকে ১০টা খারাপ কাজ করার অধিকার দেওয়া হয়। যা একবার হয়ে যায় তা হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে আমরা চাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুশোচনা বোধ কাজ করুক। বিচারপতি আরও বলেন – দয়া করে এখানে আইনি বুদ্ধি প্রয়োগ করবেন না।
বেলুড় মঠে সন্ন্যাসী ও আবাসিক মিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত ৩০
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার প্রশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির তিন সদস্যের বেঞ্চ। দেশের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের হার্লে ডেভিডসন বাইকে চড়ার ছবি নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ট্যুইট করেছিলেন, ‘এমন একটা সঙ্কটের সময়ে প্রধান বিচারপতি মাস্ক ও হেলমেট না পরে বাইকে চড়ছেন৷ অন্যদিকে লকডাউনে নাগরিকরা বিচার পাচ্ছেন না৷’
প্রশান্ত ভূষণ পরে আদালতে ক্ষমা চেয়ে জানান, তিনি খেয়াল করেননি বাইকটি স্ট্যান্ড করা আছে৷ কিন্তু আগের ৪ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কড়া ট্যুইটের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় দুঃখ প্রকাশ তো দূর, ক্ষমাও চাননি প্রশান্ত ভূষণ৷
প্রশান্ত ভূষণ এ দিন সুপ্রিম কোর্টে অ্যাফইডেভিটে জানান, ‘আমি সত্যিই লক্ষ্য করিনি, প্রধান বিচারপতি যে বাইকটিতে চড়েছিলেন, সেটি স্ট্যান্ড করা আছে৷ তাই হেলমেট পরার প্রয়োজন নেই৷ আমি ওই ট্যুইটটির জন্য ক্ষমা চাইছি৷ তবে আরেকটি যে ট্যুইট করেছি, তা সমর্থন করছি৷’
সাহারা-বিড়লা ডেয়ারি কেস থেকে শুরু করে বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু, কোহিকো পুল আত্মহত্যা মামলা, মেডিক্যাল অ্যাডমিশন স্ক্যাম, অসম এনআরসি, সিএএ-সহ একাধিক মামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রশান্ত ভূষণ সরাসরি বিচার ব্যবস্থার ফেলিওর আখ্যা দেন৷
প্রশান্ত ভূষণ একটি ট্যুইটে লেখেন, ‘ভবিষ্যতে ইতিহাসবিদরা যখন বর্তমানের ৬ বছরের সময়সীমার দিকে তাকাবেন, তখন দেখবেন, ঘোষিত জরুরি অবস্থা না হলেও কী ভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে৷ সুপ্রিম কোর্ট ও ৪ প্রধান বিচারপতির ভূমিকাও চিহ্নিত করতে পারবেন ইতিহাসবিদরা৷’