ঋষভ ফিরবে না কোনদিন, এখনও জানেনা বন্ধু দিব্যাংশু

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বয়স প্রায় একই। স্কুলও এক। যাতায়াতও ছিল একই পুলকারে। একসঙ্গে খেলা থেকে শুরু করে টিফিন খাওয়া।

একই ক্লাসে পড়াশুনো। তবে একটি দুর্ঘটনা যে একঝটকায় সব কিছু বদলে দেবে, তা হয়ত বুঝে উঠতে পারেননি কেউই।

পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় ৮ দিন পর লড়াই থামল ছোট্ট ঋষভের।

দীর্ঘ আটদিনে প্রত্যেকটি মুহুর্তে চিকিৎসকরা চেষ্টার কসুর করেননি তাকে জীবনযুদ্ধে জেতাতে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টাকেই ব্যর্থ করে মা-বাবার কোল খালি করে চলে গেল ছোট্ট ঋষভ।

পুলকার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ঋষভ সিংহ আর দিব্যাংশু ভগতকে প্রায় একই সঙ্গে গ্রিন করিডর করে আনা হয়েছিল হুগলি ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।

আরও পড়ুনঃবাংলাদেশে বিরল প্রজাতির নীলগাই উদ্ধার

সেই থেকে হাসপাতালই ঠিকানা হয়ে গিয়েছিল দুই খুদের। সময় যত গড়িয়েছে ততই অবস্থার অবনতি হয়েছিল দুই বন্ধুর। চিকিৎসকেরাও জানিয়েছিল স্টেজ ওয়ান কোমায় চলে গিয়েছে দুইজনে।

কিন্তু সেখান থেকে বেড়িয়ে আসতে পেরেছে দিব্যাংশু। কারণ তার ফুসফুস কাজ করতে শুরু করে দিয়েছিল।

কিন্তু ঋষভের ফুসফুসকে কিছুতেই কাজ করাতে পারেননি চিকিৎসকেরা। জীবনের দৌড়ে হেরে যায় ছয় বছরের ছোট্ট ঋষভ। দিব্যাংশু কিন্তু ক্রমশ সুস্থতার পথে।

ক্রমশই তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এমনকি দিব্যাংশুর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে ‘মা’ বলে  ডাকছেও সে।

একদিকে ছেলের সুস্থতার খবরে যেমন খুশির আবহ দিব্যাংশুর বাড়িতে তেমনি ঋষভের চলে যাওয়ার খবরে বাঁধ মানছে না চোখের জল।

শনিবার হাসপাতালে ছেলেকে দেখতে এসে ঋষভের বাবাকে দেখে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি দিব্যাংশুর বাবা-মা।

দিব্যাংশু যখন ঋষভের খোঁজ করবে কী উত্তর দেবেন তারা, তা ভেবেই উঠতে পারছেন না কিছুতে।

পুত্রশোকে বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন ঋষভের বাবা-মা।ছোট্ট ছেলের নিথর দেহ শ্রীরামপুরে বাড়িতে পৌঁছতেই আর নিজেদের চোখের জল সামলাতে পারেননি ঋষভের প্রতিবেশীরা।

ছেলের নিথর দেহ পৌঁছোনোর খবর পেয়ে দরজা বন্ধ করে দেন ঋষভের মা। ভাই যে আর কোনোদিন দাদা বলে ডাকবে না তা যেন কিছুতেই মানতে পারছে না আয়ুশ।

আটদিন লড়াই করার পর জীবনযুদ্ধে হেরে ছোট্ট ঋষভ পুলকার সচেতনতা নিয়ে তুলে দিয়ে গেল অনেক প্রশ্ন।

আটদিন লড়াই করার পর জীবনযুদ্ধে হেরে ছোট্ট ঋষভ পুলকার সচেতনতা নিয়ে তুলে দিয়ে গেল অনেক প্রশ্ন।

এ দিকে, পোলবার দুর্ঘটনায় বিক্ষোভে নেমেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাঁদের প্রশ্ন, ২ বছর ফিটনেসের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া গাড়িকে কী কারণে ব্যবহার করেছে পুলকার সংস্থা? কেন গাড়িগুলির বেলাগাম গতি বাগে আনতে পারছে না সরকার?

আগামী দিনে যাতে আর কোনো বাবা-মার কোল যেন খালি না হয় তাই চান ঋষভের পরিবার।

সম্পর্কিত পোস্ট