করোনা আবহে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাতে এসে খোদ হয়রানির শিকার শাসকদলের বিধায়ক

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনা আবহে রোগী ভর্তি করাতে এসে এবার হয়রানির শিকার হলেন খোদ শাসকদলের বিধায়ক।প্রায় আড়াই ঘন্টা টালবাহানার পরও রোগী ভর্তি করাতে ব্যর্থ হন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান।

ফের কাঠগড়ায় বারাসাতের বেসরকারি হাসপাতাল। ঘটনায় ক্ষুদ্ধ তৃণমূল বিধায়ক ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি তিনি জানান, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বিষয়েও নজরেও আনা হবে। যদিও রোগী ভর্তি নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ মানতে চায়নি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

উত্তর 24 পরগনার আমডাঙার বাসিন্দা নাজমা খাতুন বিবি। বয়স প্রায় ৭০-এর কাছাকাছি। সম্পর্কে বিধায়ক রফিকুর রহমানের পিসি হন ওই বৃদ্ধা। বেশকিছু দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি।

আজ সকালে শরীর আরও খারাপ হওয়ায় পিসিকে সঙ্গে নিয়ে বারাসাত রথতলার কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে আসেন তৃণমূল বিধায়ক। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন আত্মীয়।

অভিযোগ এরপরই রোগী ভর্তি করাতে গিয়ে শুরু হয় হয়রানি।চলে টালবাহানাও। অভিযোগ,সরকারি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখার পরই রোগী ভর্তি করাতে বেঁকে বসেন ওই বেসরকারি হাসপাতাল।

সকাল এগারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘন্টা রোগী ভর্তির নামে হয়রানি চলে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এতকিছুর পরও বেসরকারি ওই হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাতে ব্যর্থ হন তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান। শেষে মারুতি গাড়িতে করেই ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।

ঘটনার পরই সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমান।তিনি বলেন,”স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে হয়রানি আগে শুনেছি। তবে, এবার প্রত্যক্ষ করলাম নিজের পরিবারের ক্ষেত্রে। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ডে চিকিৎসা হলে সরকারের সুনাম বাড়বে।এটা একশ্রেণির বেসরকারি হাসপাতাল চায়না।তাঁরা সরকারের বদনাম করতে চক্রান্ত করছে”।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/illegal-liquor-in-the-area-impassive-administration-indigenous-people-holding-tridents-and-bows-and-arrows-in-protest/

বিধায়কের অভিযোগ,”পিসিকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয় টালবাহানা।প্রথমে বলে কোরোনা পরীক্ষা করাতে হবে। এরপর আমি যখন করোনা পরীক্ষার করার কথা বলি,তখন স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কার্ড দেখেই বেঁকে বসে রোগীকে ভর্তি করাতে। একবার বলছে ভর্তি নিচ্ছি। এরপর কাগজপত্র তৈরি হওয়ার পর আবারও বলছে যেহেতু কোরোনা পরীক্ষা হয়নি সেহেতু আপনার রোগী ভর্তি নেওয়া যাবে না”।

করোনা আবহে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তারজন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বারবার মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও চিকিৎসা পেতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।

কখনও সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ার অভিযোগ। আবার কখনও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও রোগীর চিকিৎসা না মেলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের যে কতটা বাস্তবতা রয়েছে তা হাড়েহাড়ে টের পেলেন শাসকদলের ওই বিধায়ক।

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান বলেন,”ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনও কানে তুলছে না।কারন একটাই যেনতেন প্রকারে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা যাতে গরিব মানুষ না পায়। আমি বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে তুলে ধরব। অভিযোগ করব জেলাশাসকের কাছেও”।

যদিও বিধায়কের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথায়,”বিধায়কের আত্মীয় ওই রোগীর করোনা উপসর্গ রয়েছে। ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর করোনা পরীক্ষার কথা বলা হয়। কিন্তু বিধায়ক আগে ভর্তি করার কথা বলে। তারপর যা পরীক্ষা। কিন্তু তা করা সম্ভব নয়। কারন ওনার জন্য হাসপাতালের অন্য রোগীদের বিপদের মুখে আমরা ফেলতে পারিনা। তাই উনি যে অভিযোগ তুলছেন তা একেবারে ঠিক নয়”।

সম্পর্কিত পোস্ট