পুরসভার কাজ নিয়ে এবার বিস্ফোরক সাধন পান্ডে, পাল্টা জবাব ফিরহাদেরও
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আমফানের পর কলকাতার বিধায়কদের ডাকা হয়নি। প্রয়োজনে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে কিভাবে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় পরামর্শ নেওয়া যেত। বর্তমান মুখ্য প্রশাসক সে পথে হাঁটেনি। তার ফল ভুগতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে। আমফান নিয়ে এবার সতীর্থ মন্ত্রীদের তোপের মুখে কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার পুরসভার কাজ নিয়ে সরব হলেন শাসকদলের মন্ত্রী সাধন পান্ডে।
এদিন শাসকদলের এই প্রবীণ মন্ত্রী বলেন,আমফান নিয়ে পুরসভার আরো প্রস্তুত থাকা দরকার ছিল। কলকাতা শহরে 5 হাজার গাছ পড়েছে এটা যেমন সত্যি। একইভাবে সত্যি পুরসভার প্রস্তত ছিল না। মাত্র 25 টি কাটার দিয়ে 5 হাজার গাছ কাটা যায় না। এই রকম পরিস্থিতি হলে কি হবে তা ভেবেই আগে থেকে তৈরি থাকতে হতো। দুঃখের হলেও সত্যি এই প্রস্তুতি পুরসভা নেয়নি।
আমফান বিধ্বস্ত বাংলাকে পুনরুদ্ধারে ব্যস্ত দু’লাখ পয়ত্রিশ হাজার মানুষ: মমতা
এদিন সাধন পান্ডে তার যাবতীয় ক্ষোভ প্রশাসক বোর্ডের উপরে উগরে দিয়েছেন। এদিন তিনি অভিযোগ করেন, প্রত্যেক জেলায় জেলাশাসক সেই জেলার বিধায়ক-মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতায় জেলাশাসক নেই।
কলকাতা চালায় কলকাতা পুরসভা। অথচ কলকাতার পুরসভার প্রশাসক বিধায়কদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে আলোচনা করে না। এক্ষেত্রে বিধায়কদের উপর ভরসা রাখার দরকার ছিল। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া যেত।
একজন কাউন্সিলরের থেকে একজন বিধায়কের কাজের পরিধি অনেক বড়। একে কাজে লাগানো যেত। তা করা হয়নি, এটাই দুঃখের। তাঁর আরও অভিযোগ, প্রশাসক কলকাতার বিধায়কদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেন না। কোনও বিপদের খবর পেলে বিধায়কদের তা দেওয়া হয় না।
আসলে এ দিন সাধন পান্ডের কথায় আরো একবার শাসকদলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসে গেল। সবচেয়ে বড় কথা, প্রবীণ বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে সাধন বাবু প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন তার দলের শাসিত পুর বোর্ডকেই। প্রশ্নের মুখে পড়লেন খোদ পুরমন্ত্রীও। আমফানের আবহে এই ঘটনা রাজ্যের শাসক দল এর জন্য যথেষ্ট অস্বস্তির।
এদিন শুধু সাধন পান্ডে যে তার সতীর্থ মন্ত্রিসভার সদস্যের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে তোপ দেখেছেন এমন নয়। কারণ সাধন বাবুর অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। এ দিন তাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেছেন, বাড়িতে বসে বড় বড় কথা বলা যায়। আমি রাস্তায় নেমে কাজ করছি।
ফিরহাদের ভাষায়, এত বড় বিপর্যয় একদিনে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। ফণীর মত বিপর্যয় কাটাতে উড়িষ্যার দেড় মাস সময় লেগেছিল। আমরা তাহলে কিভাবে মাত্র কয়েক দিনে সবকিছু স্বাভাবিক করব। কলকাতা পুরসভা তার সর্বশক্তি দিয়ে দিনরাত কাজ করছে। আমরা রাস্তায় রয়েছি। সকলকেই বুঝতে হবে শহরকে পরিষ্কার করতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই সময়টা আমাদের দিতে হবে। আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি।
এদিন সাধন পান্ডের আলোচনা না করা নিয়ে ফিরহাদ বলেছেন, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করা যায় না। নবান্নে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। উনার কোন পরামর্শ থাকলে কেন সাধন দা পুরসভায় এলেন না।