দিনভর নাটকের পর ইস্তফা প্রত্যাহার সৌমিত্রের, সাফাই কেন্দ্রীয় নেতৃ্ত্বের সম্মান রক্ষার্থেই সিদ্ধান্ত

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ যতটা মেঘ গর্জালো, ততটা বর্ষালো না । এই নিয়ে দ্বিতীয় বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। দুপুরে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষদের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে একগুচ্ছ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ফেসবুকের মাধ্যমেই পোস্ট করে জানিয়ে ছিলেন তিনি যুব মোর্চা সভাপতির পদ থেকে এবং সমস্ত কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন ।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই বৈঠকে রাজ্য বিধানসভার বাজেটের তুমুল সমালোচনা করেন তিনি। তখনই তাঁকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন সৌমিত্র খাঁ সরাসরি এদিন ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি বলেছেন বারবার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। একটি জেলায় ভারতীয় জনতা পার্টি আটকে গিয়েছে।

এর উত্তরে শুভেন্দু বেশি কিছু বলেননি। মুচকি হেসে তাঁর উত্তর “সৌমিত্র আমার ভাই। দিল্লি গেলে আমি ওর বাড়িতে খাই। সুতরাং ফেসবুক লাইভে ও কি বলল সেটাতে আমি গুরুত্ব দিতে চাই না।” এরপর কেটে গিয়েছে বেশ কিছু সময়।

সন্ধ্যে সাতটার কিছুক্ষণ পরেই সৌমিত্র খাঁ হঠাৎই ফেসবুকের মাধ্যমে আবার জানিয়ে দেন তিনি যুব মোর্চার পদে থাকছেন। তার কারণ হিসেবে অবশ্য তিনি জানিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের পরামর্শ অনুযায়ী এবং যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যর পরামর্শ মেনেই তিনি তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করলেন।

‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে একটা কথাও নেই ‘- ‘ত্রাণের সরকার ‘-র বাজেটকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপির

দিনভর নাটকের পর সৌমিত্রকে দিল্লিতে তলব করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিষ্ণুপুরের সাংসদ জানান তার সঙ্গে কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এদিন বাংলা থেকে ৪ সাংসদ জায়গা পেলেও শিকে ছেঁড়েনি সৌমিত্রর। প্রথম ৮জন মন্ত্রিত্বের দৌড়ে থাকলেও পরে চারজনের জায়গা হয় মোদীর মন্ত্রিসভায়।

এর আগেও দলের মধ্যে একাধিকবার বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন সৌমিত্র খাঁ। দল তাকে বারবার সতর্ক করেছে। দিন কয়েক আগে পৃথক রাঢ়বঙ্গের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তিনি । তখনও দল পাশে দাঁড়ায়নি সৌমিত্রের।

এদিন ফেসবুক লাইভে সৌমিত্র দিলীপ ঘোষকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। খড়গপুর থেকে তিনি বলেন, “যার যেমন বোঝার শক্তি সে তেমন বুঝবে। কে কি বোঝে তার অধিকার তাঁকে দেওয়া হয়নি। হয়ত মন্ত্রীত্বের লাইনে ছিলেন। পাননি বলে হতাশা। কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। তবে সেটা বলার জন্য দলের ভেতর জায়গা আছে।

তৃণমূলত্যাগী বিজেপি সাংসদের উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য আমাদের দলে অনেক নতুন লোক এসেছেন। তারা পার্টি বোঝেন না ।আদর্শ বোঝেনা । ডিসিপ্লিন কি সেটাও বোঝেন না । সেটা বোঝার পর কথা বলা উচিত।দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সৌমিত্র খাঁ এর সম্পর্ক মধুর নয় সে সবাই জানে। কিন্তু এ দিনের ঘটনায় সেই সম্পর্কের তিক্ততা আরও একধাপ এগিয়ে গেল তা নিঃসন্দেহে স্পষ্ট।

সম্পর্কিত পোস্ট