দেড় বছর ধরে বন্ধ স্কুল, পঠন-পাঠন ছাড়া ছন্নছাড়া শৃঙ্খলা
শুভজিৎ চক্রবর্তী
স্কুলের বেঞ্চ, বোর্ড, চক, ডাস্টার, ক্লাসরুম থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে ছাত্ররা। নেই প্রেয়ারের অভ্যাস৷ স্কুল ইউনিফর্মটা আর ব্যবহার হয় না। চুল, নখ না কাটার জন্য টিচারের বকুনি নেই। নেই কোনও হাতের কাজ। শরীরচর্চার আলাদা কোনও আসর৷ দেড় বছরে সবথেকে বেশী দুরত্ব বেড়েছে শৃঙ্খলার সঙ্গে৷ শৈশবের পাওয়া শৃঙ্খলার বন্ধন থেকে অনেক দূরে বসবাস অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাসের৷
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ছাত্রদের শৃঙ্খলা তো দূর, স্কুলে ফেরানো সম্ভব হবে তো? কারণ হিসাবে প্রথমেই থাকছে মহামারীর আতঙ্ক। দ্বিতীয়, অভাব অনটন মেটাতে স্কুলের পাট চুকিয়ে কাজ খুঁজে নেওয়া৷ শহর, মফস্বল, গ্রাম পেরিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন এটাই সব চাইতে বড় প্রশ্ন। প্রশ্নটা কয়েকশো ছাত্রছাত্রীর নয়। প্রশ্নটা একটা গোটা প্রজন্মকে নিয়ে৷
স্বাধীনতার পর শিক্ষা নিয়ে ভারতে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। যার নাম ডিএম কোঠারি কমিশন৷ যার প্রাথমিক স্তরে দুটি জিনিস উল্লেখিত ছিল৷ এক, এক কিলোমিটারের ব্যাসার্ধের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন। দুই, তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন৷ কিন্তু এখনও বেশ কিছু প্রত্যন্ত গ্রাম সঠিক শিক্ষা পরিকাঠামো থেকে বঞ্চিত৷
করোনা আবহে ইছামতি নদীতে বিসর্জনে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা, লঙ্খন করা যাবে না সীমানা
আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের কথায়, গত দেড় বছর ধরে খুব কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রী রয়েছে যাদের কাছে উপযুক্ত ইন্টারনেট ব্যবস্থা এবং ডিভাইস রয়েছে৷ প্রায় দেড় বছর ধরে যারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকল। এরপর ছাত্ররা স্কুলমুখী হলেও তাঁরা নিজ জীবনের মূল্যবান ৩ বছর পিছিয়ে থাকল৷ সমস্ত রাজ্যের এবিষয়ে ভাবা অবশ্যই প্রয়োজন৷ নাহলে একটা গোটা প্রজন্মকে আমরা হারাবো।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীরা স্কুলছুট হয়েছেন। আমরা যদি এই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এখনই না কিছু ভাবি তাহলে এর ফল আমাদেরকে নিয়ে আরও ৬০ থেকে ৭০ বছর অবধি ভোগ করতে হতে পারে।
সরকারের তরফে সারা দেশজুড়ে টিকাকরণের প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। একাধিক রাজ্যে ধীরে ধীরে স্কুল খুললেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার৷মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছে নির্বাচনে৷ যদিও পুজোর পর পরিস্থিতি বুঝে স্কুল খুলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। যদি না খোলা হয় এখনই স্কুল? তাহলে কী কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা দফতর? প্রশ্ন অভিভাবক থেকে পড়ুয়াদের