মধ্যপ্রদেশ উপনির্বাচন: সিন্ধিয়ার মান রক্ষার লড়াই

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মধ্যপ্রদেশে চলছে লিটমাস টেস্ট। শুধুমাত্র সরকার রক্ষা নয়, নতুন করে জ্যোতিরাদিত্য ফ্যাক্টরকে কাজে লাগিয়ে কতটা সফল হতে পারবে বিজেপি। কোন ফর্মুলায় মধ্যপ্রদেশে বাজিমাত করবে বিজেপি? উপনির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের যাচাই করে নিতে চাইছে কংগ্রেস।

এমনিতেই নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে স্টার প্রচারকের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের নাম। তার ফলে খানিকটা হলেও অসুবিধায় পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে। অন্যদিকে বাংলা থেকে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে ছেঁটে আপাতত মধ্যপ্রদেশের সংগঠনে জোর দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

এর থেকেও বড় নজর রয়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ওপর। চলতি বছরের মার্চ মাসেই ২২ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগদান করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। কমলনাথকে সরিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেন শিবরাজ সিং চৌহান। সিনিধিয়া ঘনিষ্ঠ সমস্ত বিধায়ককে কেবিনেটে জায়গা দিয়ে শিবরাজ সিং বলেছিলেন প্রয়োজনে শিবকে বিষ পান করতে হয়। সেই বিষ অয়ান করে নিজেদের জায়গা ফেরাতে পেরেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী? মধ্যপ্রদেশের ২৮ টি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে আপাতত সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে।

এই মুহুর্তে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আসতে হলে ২৮ টি আসনেই জয়লাভ করা জরুরী। যার মধ্যে ২২ টি আসনে রয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য ঘনিষ্ঠ প্রার্থী। অন্যদিকে ক্ষমতায় থাকতে হলে বিজেপিকে ৯ টি আসনে জয়লাভ করতেই হবে। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্যের কাছে উপনির্বাচনের অঙ্ক একেবারে আলাদা। এই মুহুর্তে বর্ষীয়ান রাজনেতার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল নিজের ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের ২২ টি আসনেই নিজ আধিপত্য কায়েম রাখা।

এই মুহুর্তে মধ্যেপ্রদেশের উপনির্বাচনে বিজেপির থেকেও বড় ফ্যাক্টর হল সিন্ধিয়া। চম্বল এবং গোয়ালিয়োর, যেখানে সিন্ধিয়া পরিবারের রাজ রয়েছে। সেখানকার ১৬ টি আসন পাওয়া সবথেকে জরুরী। তাই তো নির্বাচনী প্রচারমঞ্চ থেকে মধ্যপ্রদেশের রাজনেতাকে বলতে শোনা যায়, “এই নির্বাচন শুধুমাত্র বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে নয়, এটা গোয়ালিওর এবং চম্বল এলাকার সম্মানের জন্য লড়াই”।

উপনির্বাচনের লড়াইয়ে জ্যোতিরাদিত্যের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র কংগ্রেস ময়দানে নামেনি। এমনকি ২৮ টি আসনের প্রত্যেকটিতে প্রার্থী দিয়েছেন বেহেনজির বহুজন সমাজবাদী পার্টি। ভোট কাটাকুটির খেলায় বিএসপিকে হাল্কাভাবে নিচ্ছে না গেরুয়া শিবির। তাই প্রচারের ওপর বেশী করে জোর দিতে চাইছেন তাঁরা।

চম্বল এবং গোয়ালিওরের পর মোরেনা বিধানসভা কেন্দ্রে নজর রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। দলবদলের পর এখানকার বিধানসভা কেন্দ্রে পদ্মের দাপট অব্যাহত রাখতে মাঠে নেমে প্রচার শুরু করেছেন শিবরাজ সিং চৌহান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমা ভারতী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। একইসঙ্গে মঞ্চে থাকবেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও। শুধুমাত্র কথায় নয়, পুর্ণ সমর্থনের দাবীতে নিয়ে মোরেনা কেন্দ্রে প্রচার চালিয়েছেন সিন্ধিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যা।

তবে বিজেপি ফ্যাক্টরের মাঝেও দলবদলের হিড়িক কংগ্রেসকে অক্সিজেন দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে দলবদলের হিড়িকে কিছুটা হলেও জমি ফিরে পাবে কংগ্রেস। তাই লড়াই যে টক্করে টক্করে হবে তা বলার অপেক্ষা থাকে না।

সম্পর্কিত পোস্ট