কৃষক আন্দোলনের সাত মাস, রাষ্ট্রপতিকে স্মারক লিপি পাঠাতে চলেছেন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতারা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ‘কৃষি বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ২৬ জুন জরুরী অবস্থার ৪৬ বছর এবং দিল্লি উপকন্ঠে কৃষক আন্দোলনের ৭ মাস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা।
এবিষয়ে অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক এবং এসকেএম নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, “২৬ জুন সারা দেশে ‘কৃষি বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। এই ২৬ জুনের তাৎপর্য হল, ৪৬ বছর আগে ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকার জরুরী অবস্থা জারি করেছিল৷ মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রায় দেড় লক্ষ বিরোধী নেতাদের জেলে পোড়া হয়েছিল।”
তাঁর কথায় “জরুরী অবস্থার বর্বরতা আমরা ১৯৭৫-৭৬ সালে দেখেছি৷ সেই জরুরী অবস্থা ভারতীয় গণতন্ত্রে সবচেয়ে বড় আঘাত এনেছিল৷ সংবিধানের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ৪৬ বছর পর ৭ বছর এখন দেশে নরেন্দ্র মোদির সরকার চলছে। এমার্জেন্সির সময় যে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছিল, সেই অবস্থা এখন তৈরি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন “এসমস্ত কিছুর প্রতিবাদে ২৬ জুন ‘কৃষি বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’ এর ডাক দেওয়া হয়েছে। যেহেতু কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন, তাই দেশের সমস্ত রাজভবন ঘেরাও করে রাজ্যপালদের কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হবে। রাজ্যপালদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হবে। ইতিমধ্যেই সেই স্মারকলিপি সমস্ত রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে। সমস্ত রাজ্য নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে রাজ্যপালের কাছে তা জমা দেবে। রাজভবনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে তা পাঠানো হবে। সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দল, ছাত্র যুব মহিলারাদের সমর্থন রয়েছে”।
সিপি(আই)এম পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ” ওই সময় ঘোষিত এমার্জেন্সি ছিল, এখন অঘোষিত এমার্জেন্সি চলছে। অর্থাৎ ওই সময় মানুষের অধিকার যেভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, আজকে এমার্জেন্সি ঘোষণা না করে সমস্ত অপকর্ম করা হচ্ছে। সংবিধানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সংসদের কোনও মর্যাদা নেই। বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর আঘাত আনা হয়েছে। কৃষকদের কথা না শুনে জোর করে সমস্ত কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছ”৷
উল্লেখ্য, গত বছর সংসদে তিন কৃষি আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই দেশের একাধিক প্রান্তে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। নভেম্বর মাস থেকে সিংঘু, টিকরি এবং গাজিপুর বর্ডারে প্রায় সাত মাস ধরে আন্দোলনে অটল রয়েছে কৃষকরা। কৃষকদের সঙ্গে জানুয়ারিতে শেষ সমঝোতার বৈঠক করে কেন্দ্র। কিন্তু কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। দীর্ঘ সময়ের আন্দোলনকে ভেঙে নিয়েছেন কৃষকরা। তিন আইন ফেরত না নেওয়া অবধি আন্দোলন জারি থাকবে বার্তা কৃষকদের৷