ভাঙছে বঙ্গ বিজেপি! শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে আলাদা কমিটি গঠনের হুঁশিয়ারী বিক্ষুব্ধ নেতাদের

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গ বিজেপিতে যুদ্ধ যেন থামছেই না। ক্রমশ ক্ষোভের আগুনে বিজেপির অন্দরে সমান্তরালভাবে আরো একটি বিজেপি যেন গজিয়ে উঠেছে। চরম আকার নিচ্ছে নতুন রাজ্য কমিটি গঠনের পর তা নিয়ে দলের নেতৃত্বদের একের পর এক বিবৃতি।

শনিবার কলকাতায় পোর্ট ট্রাস্টের একটি গেষ্ট হাউসে বিজেপির বিদ্রোহী নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শান্তনু ঠাকুর, সুব্রত ঠাকুর, মুকুট মণি অধিকারী, জয়প্রকাশ মজুমদার বিজেপির অন্যান্য পদাধিকারীরা।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিস্ফোরক বিবৃতি দেন শান্তনু ঠাকুর। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “চোখের সামনে দলকে শেষ হতে দেখতে পারবো না। আমাদের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির হাতকে শক্ত করা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে দলকে বৃহত্তর জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কোন উদ্দেশ্য তাতে নেই। উচ্চ নেতাদের ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।যে কমিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে কোনভাবেই দলের ভালো হবে না।”

শান্তনু ঠাকুরের অভিযোগ তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতা ওই কাজ করেছেন। পরিকল্পনা করেই বাদ দিয়েছেন বিজেপির সংগঠনের অভিজ্ঞ নেতাদের। কিন্তু কার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছেন শান্তনু ঠাকুর? এই প্রশ্নের জবাবে শান্তনু ঠাকুর জানিয়েছেন, “সংগঠনের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তার নাম নিয়ে তাকে প্রচারের আলোয় আনতে চাই না।” অর্থাৎ এর থেকেই স্পষ্ট বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বিরুদ্ধেই একের পর এক বাক্যবাণ তিনি ছুঁড়ছেন।

প্রসঙ্গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে মতুয়াদের একটা বিরাট অংশের সমর্থন পেয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করেছিলেন মতুয়ারা। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পর চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত মতুয়াদের কোনো দাবি পূরণ করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। শুধু তাই নয় রাজ্য কমিটিতে মতুয়াদের প্রতিনিধি হিসেবে কাউকে সেখানে রাখা হয়নি।

নয়া বিজ্ঞপ্তিতে বিভ্রান্তি দূর, সমস্ত স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা পাবেন কোয়ারেন্টাইন লিভ

উল্লেখ্য নতুন কমিটি গঠন নিয়ে বিজেপির এই অসন্তোষ আজকে নতুন নয়। একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করে বিদ্রোহ শুরু করেছেন বিজেপির বিধায়করা। যদিও বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন “ওটা অফিশিয়ালি পার্টি মিটিং নয়। তবে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। কোন একজনের বিরুদ্ধে বলছেন তবে কারো কোন বক্তব্য থেকে থাকলে দলের পরিকাঠামোর মধ্যে বলতে হবে। বিজেপিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোন জায়গা নেই।”

বিষয়টা যে এখানেই থেমে গেছে এমনটা কিন্তু নয়। শমীক ভট্টাচার্যের এই দাবি রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতারা। তাদের দাবি বিজেপিতে শুধু মতুয়ারা বঞ্চিত হয়নি। বঞ্চিত হয়েছেন এসসি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের থেকেও শোনা যায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে আলাদা করে কমিটি গঠন করতে পারেন তারা। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় জনতা পার্টি এরাজ্যে যে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যাবে তা এখন স্পষ্ট।

২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এ রাজ্যে বিজেপির এই ভাঙ্গন আপাতত কিভাবে রোখা সম্ভব আপাতত তা নিয়েই চলছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কি সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় নেতারা,  সে দিকেই নজর রয়েছে গোটার রাজনৈতিক মহলের।

সম্পর্কিত পোস্ট