নিজে হেরে কংগ্রেসকে জিতিয়ে দিলেন শশী
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নরেন্দ্র মোদির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস ভারতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ কোণঠাসা হয়েছে। গত ১০ বছরে এই ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’র যাবতীয় অবদান ভুলিয়ে তাকে স্রেফ একটি পারিবারিক দল হিসেবে মানুষের মনে প্রতিষ্ঠা করতে সফলও হয়েছে। সেইসঙ্গে দলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে বারবার কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন মোদি-শাহরা। তাতে বিজেপির নিজস্ব ভোটার নয় এমন মানুষরাও প্রভাবিত হয়েছেন।
সব মিলিয়ে কংগ্রেস সম্বন্ধে যেন একটি নেগেটিভ ইমেজ তৈরি হয়েছে সর্বত্র। কিন্তু বুধবার তাদের সভাপতি নির্বাচনের ফলের পর জাতীয় স্তরে কংগ্রেস যে নিজেদের ভাবমূর্তি অনেকটাই উদ্ধার করতে পারল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এর কাণ্ডারী হয়ে থাকলেন পরাজিত শশী থারুর।
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত জেনেই লড়াইয়ে নেমেছিলেন শশী। বার বার বলেছেন, তিনি কিছুতেই এই লড়াই ছেড়ে যাবেন না। দলের গণতন্ত্র তুলে ধরতে এই ভোট জরুরি বলেও প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছিলেন। অর্থাৎ নিজের জয় নয়, শশী থারুরের লক্ষ্যই ছিল সর্বসম্মুখে কংগ্রেসের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এ বলতে গেলে ‘নিজে শূলে চড়ে সাম্রাজ্যকে রক্ষা’ করার সমান। তাতে সম্পূর্ণ সফল হলেন শশী।
খিদের জ্বালায় জ্বলছে ভারতবাসী! ঢের ভালো আছে পাকিস্তানিরা
ভারত তো বটেই, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় আর কোনও রাজনৈতিক দলের প্রধান এইভাবে গোপন ব্যালটের ভোটের মাধ্যমে বেছে নেওয়ার রীতি আছে বলে মনে পড়ে না। সিপিএমের মতো বেশ কিছু কমিউনিস্ট পার্টি অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের মাধ্যমে দলের নেতা ঠিক করলেও তাদের ভোটিং পদ্ধতি অনেকটাই আলাদা।
আর কংগ্রেসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘নেতার ইচ্ছায় ধর্ম’ পালনের! মুষ্টিমেয় দু-তিনজন নেতার ইচ্ছেতেই যে তাদের সভাপতি নির্ধারিত হয়, কোনও ভোট হয় না এ তথ্য অতি বড় বিজেপি নেতাও অস্বীকার করতে পারবেন না। ফলে কংগ্রেস এভাবে সভাপতি বেছে নিয়ে কার্যত রেকর্ড তৈরি করল বর্তমান ভারতীয় রাজনীতিতে।
এদিকে মল্লিকার্জুন খাড়্গে’র প্রতি হাইকমান্ডের নীরব সমর্থন আছে বুঝেও সভাপতি পদের লড়াইয়ে অনড় ছিলেন শশী। তিরুবন্তপুরমের এই ‘স্মার্ট’ সাংসদের জন্যই আজ গায়ে লেগে যাওয়া পরিবারতন্ত্র ও গণতন্ত্রহীনতার ট্যাগ অনেকটাই মুছে ফেলতে সফল হয়েছে কংগ্রেস। শশী শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের ময়দানে ছিলেন বলেই সভাপতি নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘদিন পর টানা প্রচারের আলোয় থেকেছে কংগ্রেস। সবমিলিয়ে হেরেও ‘ম্যান অব দ্যা ম্যাচ’ শশী থারুর।