শহীদ দিবসে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু-তৃণমূল তরজা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি জমি আন্দোলনের লড়াইয়ে প্রাণ হারান সেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতি এবং ভরত মন্ডল। ২০০৮ সালের পর থেকে সেই দিনটিকে স্মরণ করে শহীদ সমাবেশ করে আসছে ভুমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি।

প্রত্যেক বছর সূর্যোদয়ের আগে এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে থাকতেন তৃণমূল নেতারা।

এবছর সেই শুভেন্দু অধিকারী যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। কিছু সময়ের ব্যবধানে, কিছু দুরত্বের ব্যবধানে ৭ জানুয়ারিতে দুটি সভা হল নন্দীগ্রামে। এমনকি নেতাইতে শুভেন্দুর মাল্যদানের পর মঞ্চ শুদ্ধ করল তৃণমূল। আর এই ঘটনায় কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

রাত শেষ হওয়ার আগেই শহীদ মিনারে বাতি জ্বালিয়ে স্মরণ সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সেখানে বলেন, অনেকে বলেছিলেন নন্দীগ্রাম শহীদ বেদী অবধি উপস্থিত হতে পারবেন না। কিন্তু সেই ‘রক্তচক্ষু’ –কে উপেক্ষা করেই আগের দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/shah-rukh-will-be-at-the-virtual-kolkata-film-festival/

ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ভাঙ্গাবেড়ার ব্রিজের কাছে মঞ্চ বেঁধে সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে সভা করে তৃণমূল। সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেতারা বলেন, কোন জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে? শিশির বাবুকে বলব জলাতঙ্ক রোগের ডাক্তার দেখান। নাহলে ছেলেটার ক্ষতি হয়ে যাবে।

নন্দীগ্রামের আন্দোলন মানুষ এবং নেত্রীর। তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বার্তা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির। এরপর দলনেত্রীর নির্দেশে শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে অভাব অভিযোগের কথা শোনেন বলে জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

সকাল হতেও একই ছবি। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ নেতাইয়ের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। শহীদ পরিবারের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন তিনি।

সেখানে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তিনি আগে কখনও এই দিনটিকে রাজনৈতিক পতাকা নিয়ে করেননি। কিন্তু নেতাই জুড়ে তৃণমূলের পতাকায় ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নেতাইয়ের শহীদ বেদী থেকে শুভেন্দুর মুখে ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগানে মনঃক্ষুণ্ণ হন স্থানীয় নেতারা। অনেকেই দাবী করছেন কোনও রাজনৈতিক শ্লোগান না দিলেই ভালো করতেন শুভেন্দু।

এরপর সেই মঞ্চে শুদ্ধিকরণ করে তৃণমূল নেতৃত্ব। মাল্যদান করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সহ মহাসচীব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। নেতাই থেকে শুরু হবে পেটাই। হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। দল চাইলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজি বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সপ্তমে সুর চড়ালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/farmers-tractor-rally-against-farm-laws/

অন্যদিকে যখন নন্দীগ্রাম ঘিরে যখন বিজেপি বনাম তৃণমূলের তাজিয়া ঘিরে সরগরম রাজনীতি। তখনই গড়বেতায় সুশান্ত ঘোষের নেতৃত্বে বিরাট পদযাত্রায় শামিল হল বামেরা। সেখান থেকে সিপি(আই)এম নেতা সুশান্ত ঘোষ বলেন, তৃণমূলের মদতেই মাওবাদীরা নেতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত করেছিল। সেই ঘটনা একদিন সত্য প্রমাণিত হবে। ১১ সালে সিপিএমের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর পুর্ব পরিকল্পনা।

সব মিলিয়ে নন্দীগ্রাম নিয়ে যখন শুভেন্দু বনাম তৃণমূলের তরজা শুরু হয়েছে। তখন এই ঘটনায় মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন ভুমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সমর্থকরা। নন্দীগ্রামের আন্দোলনের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান হয়েছিল।

সেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা শুভেন্দু অধিকারী চলে যাওয়াতে বেশ বিপাকে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।

সম্পর্কিত পোস্ট