বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে তৃণমূলে ফিরলেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সিরাজ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব মেদিনীপুরে দলনেত্রীর সভার একদিন আগে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সিরাজকে ফিরিয়ে দলবদলের দাবায় এ বার পাল্টা চাল দিল তৃণমূল।
রবিবার তৃণমূল ভবনে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রর উপস্থিতিতে তিনি দলবদলে ফের তৃণমূলে যোগদান করলেন।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের আগে গত বছর ২৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র উপস্থিতিতে কোলাঘাটে বিরাট জনসভা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সিরাজ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি।অধিকারীদের সৌজন্যেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হন। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দুর দূরত্ব তৈরি হলে সিরাজ বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন।
একনিষ্ঠ শুভেন্দু অনুগামী হয়েই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দকুমার থেকে জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হন। সেই আসনে জিতে জেলা পরিষদে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ হন। কিন্তু শুভেন্দুর সঙ্গে দলের বিরোধের কারণেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।
সোমবার, ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। তার আগে অধিকারী পরিবার তথা বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়ার লক্ষ্যেই সিরাজকে দলে ফেরানো হল বলে জানানো হয়েছে। এই যোগদানকে আপাতত নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে তৃণমূল।
মিলল না সবুজ সঙ্কেত, আসন বন্টন নিয়ে বাম-কংগ্রেসের তরজা অব্যাহত
সেইসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের লক্ষ্য, শুভেন্দুকে ‘প্রভাবহীন নেতা’ প্রমাণ করা। সেই লক্ষ্যেই সিরাজকে দলে টেনে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, ”ভুলবশত কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে বিজেপিতে সামিল হয়েছিলেন সিরাজ। ২০১৬ সালে নন্দকুমারে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করবেন।”
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছেন সিরাজ। তিনি বলেছেন, ”শুভেন্দু কাজে বাধা দেন। উনি ‘আমি’, ‘আমি’ করেন। আর ‘আমিত্বে’ ভোগেন। ‘আমরা’ হলে কাজ করতে দেন না। সৌমেন মহাপাত্রর মতো নেতাকে তমলুক থেকে সরে যেতে হয়েছিল ভাল কাজ করায়।
সিরাজের কথায়, ২০১১ ও ২০১৬ সালে শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারী নন্দকুমারের টিকিট দেওয়ার কথা বললেও দেননি। আমার প্রতিবাদ ওঁদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ জানিয়ে ২০১৬ সালে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলাম।”
সঙ্গে সংযোজন, ”বিজেপিতে ভুল করে গিয়েছিলাম। ওটা বড় লোকের দল, তৃণমূল গরিবের দল। তাই বুঝতে পেরে ফিরে এলাম।”
এর পর সিরাজের বক্তব্য, ”২০০৮ সাল থেকে শুভেন্দু আমাকে ব্যবহার করেছেন। ওঁর সঙ্গে কাজ করতে চাই না। তাছাড়া বিজেপিতে গিয়েও কাজের সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তাই ফিরে এলাম।”
দলে থাকার আশ্বাস দিয়েও ব্রাত্য জিতেন্দ্র, জল্পনা রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে
পাশাপাশি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেককে ভ্যাকসিন দিতে চায় রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণের নাম করে রাজনীতি করছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প শক্তি এরাজ্যে নেই। মানুষ বুঝেছে আস্থা রেখেছে। বিজ্ঞাপনের খরচ আর কিছু মিডিয়াকে সঙ্গে রেখে প্রভাবিত করে লাভ নেই। সাধারণ মানুষের মাথার ছাদ আর পেটের ভাত দুটোই দিতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠান্ডায় কৃষকেরা পড়ে আছেন এখানে এসে মুঠো চাল খুঁজে বেড়াচ্ছে।